দিনের শুরুটা লেবু জল দিয়ে করা উচিত কেন জানেন?

এই লেখায় যে পানীয়টির প্রসঙ্গে আলোচনা করা হয়েছে সেটি বানাতে প্রয়োজন পরবে শুধু এক গ্লাস জল এবং একটা অর্ধেক লেবুর। একেবারে ঠিক শুনেছিন, এই দুটি উপাদানের সহযোগে বানানো সরবাত রাত দিন খেলেই দেখবেন ডাক্তারের চেম্বারের ঠিকানা আপনি একেবারে ভুল গেছেন। কেন এমনটা বলছি, তাই ভাবছেন তো? একবার চোখ রাখুন বাকি প্রবন্ধে, তাহলেই সব প্রশ্নর উত্তর পেয়ে যাবেন। একাধিক গবেষণায় একথা প্রমাণিত হয়েছে যে নিয়মিত লেবু জল খেলে শরীরের নানা উপকারে লাগে। যেমন...

১. ভিটামিন সি-এর ঘাটতি দূর হয়: শরীরকে সচল রাখতে যে যে উপাদানগুলির প্রয়োজন পরে, সেগুলির অন্যতম হল ভিটামিন সি, যা শরীরকে রোগ মুক্ত রাখার পাশাপাশি সার্বিকভাবে শরীরের কর্মক্ষমতা বাড়াতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে। তাই দেহের অন্দরে কোনও ভাবেই যাতে ভিটামিন সি-এর ঘাটতি না হয়, তা সুনিশ্চিত করতে নিয়মিত কয়েক গ্লাস লেবুর রস খেতে ভুলবেন না যেন! প্রসঙ্গত, যে যে ফলে প্রচুর মাত্রায় ভিটামিন সি মজুত রয়েছে, লেবুর তাদের মধ্যে অন্যতম।

২. সংক্রমণের প্রকোপ কমায়: লেবুতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল প্রপাটিজ। তাই তো লেবু জল যে কোনও ধরনের সংক্রমণ, বিশেষত গলার সংক্রমণ কমাতে দারুনভাবে সাহায্য় করে থাকে। এক্ষেত্রে লেবু জলে দিয়ে গার্গেল করলেই উপকার পাওয়া যায়।

৩. স্ট্রেস এবং অবসাদ থেকে মুক্তি মেলে: একাধিক গবেষণায় একথা প্রমাণিত হয়েছে যে নিয়মিত লেবুর জল খেলে স্ট্রেস একেবারে কমে যায়। সেই সঙ্গে অবসাদের প্রকোপও কমে। আসলে লেবু জলে উপস্থিত বেশ কিছু উপাদান শরীরে প্রবেশ করা মাত্র বিশেষ কিছু হরমোনের ক্ষরণ বাড়িয়ে দেয়। যে কারণে এমন সব সমস্যা নিমেষে কমে যেতে শুরু করে। ৪. ত্বকের সৌন্দর্য বৃদ্ধি পায়: ৪. ত্বকের সৌন্দর্য বৃদ্ধি পায়: হাজারো বিউটি প্রডাক্ট যা করে উঠতে পারেনি, তা লেবুর জল নিমেষে করে ফলতে পারে। আসলে এই পানীয়তে উপস্থিত বেশ কিছু উপাদান ত্বকের হারিয়ে যাওয়া ঔজ্জ্বল্য ফিরিয়ে আনে। সেই সঙ্গে ত্বকের বয়স কমানোর পাশাপাশি ব্ল্যাক হেডস এবং বলিরেখা কমাতেও বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে। প্রসঙ্গত, গরমকালে ত্বককে ঠান্ডা এবং ঘামমুক্ত রাখতে লেবুর জল দিয়ে বারে বারে মুখটা ধুতে পারেন, দেখবেন উপকার পাবেন।

৫. ওজন কমাতে সাহায্য করে: দেহের চারিদিকে জমতে থাকা অতিরিক্ত চর্বিকে ঝরিয়ে ফেলতে লেবুর রসের কোনও বিকল্প হয় না বললেই চলে! কারণ এই পানীয়টিতে উপস্থিত নানাবিধ উপকারি উপাদান হজম ক্ষমতাকে এতটা বাড়িয়ে দেয় যে অতিরিক্তি চর্বি ঝরিয়ে ফেলতে একেবারেই সময় লাগে না।

৬. উচ্চ রক্তচাপকে নিয়ন্ত্রণে রাখে: লেবু জলে থাকে প্রচুর মাত্রায় পটাশিয়াম, যা রক্তচাপকে স্বাভাবিক রাখতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে। তাই তো এমন রোগে যারা বহু দিন ধরে ভুগছেন তারা প্রতিদিন সকাল-বিকাল লেবু জল খাওয়া শুরু করুন, দেখবেন দারুন ফল পাবেন। তবে এমনটা করার আগে একবার চিকিৎসকের সঙ্গে পরামর্শ করে নিতে ভুলবেন না যেন।

৭. দেহে জলের ঘাটতি দূর করে: এমনি জল খাওয়ার থেকে তাতে কয়েক চামচ লেবুর রস মিশিয়ে দিলে স্বাদের ব্যাপক উন্নতি ঘটে। ফলে স্বাভাবিকভাবেই জল খাওয়ার পরিমাণ বেড়ে যায়। আর যেমনটা আপনাদের সবারই জানা আছে যে দেহের অন্দরে যত জলের পরিমাণ বাড়তে থাকে, তত ক্ষতিকর টক্সিক উপাদানেরা বেরিয়ে যেতে শুরু করে। ফলে স্বাভাবিকভাবেই সার্বিকভাবে দেহ এবং ত্বকের স্বাস্থ্যের উন্নতি ঘটে।

৮. পেটের স্বাস্থ্যের উন্নতি ঘটে: যারা বদ হজম, কনস্টিপেশন, বারংবার পেট খারাপ সহ নানাবিধ পেটের রোগে ভুগে তাকেন তারা প্রতিদিন সকালে গরম জলে লেবুর রস মিশিয়ে খাওয়া শুরু করুন। এমনটা করলে স্টামাক অ্যাসিডের ক্ষরণ ঠিক মতো হতে শুরু করবে। ফলে রোগের প্রকোপ তো কমবেই, সেই সঙ্গে শরীরে জমে থাকা ক্ষতিকর উপাদান বা টক্সিনও বেরিয়ে যাবে।

৯. শ্বাস কষ্ট দূর করে: যারা অ্যাস্থেমা বা কোনও ধরনের রেসপিরেটরি প্রবলেমে ভুগছেন তারা যত শীঘ্র সম্ভব রোজের ডায়েটে লেবুর জলকে অন্তর্ভুক্ত করুন। দেখবেন কেমন ফল পান! আসলে এই পানীয়টি শ্বাস-প্রশ্বাস জনিত একাধির জটিলতাকে কমিয়ে ফেলতে দারুন কাজে আসে।

১০. মুখ গহ্বরের নানা রোগ সেরে যায়: মুখ থেকে খুব দুর্গন্ধ বেরয়? এদিকে নানা কিছু করেও সুরাহা মিলছে না? তাহলে আজ থেকেই লেবু জল খাওয়া শুরু করুন। দেখবেন বদ গন্ধ একেবারে কমে যাবে। শুধু তাই নয়, মাড়ি থেকে রক্ত পাত এবং দাঁতে যন্ত্রণা হওয়ার মতো সমস্যা হলেও এই ঘরোয়া পদ্ধতিটিকে কাজে লাগাতে পারেন। দেখবেন দারুন উপকার পাবেন।

Random Post