সুস্থ থাকতে চান তো?

খাবারকে সুস্বাদু বানাতে আমরা নানা ধরনের মশলা ব্যবহার করে থাকি। কিন্তু খেয়াল করি না এই সব রোজের ব্যবহৃত মশলাগুলির মধ্য়েই এমন কিছু উপাদান রয়েছে, যা শরীর গঠনে নানা ভাবে আমাদের সাহায্য করে। যেমন ধরুন ব্রেণ পাওয়ার বা মস্তিষ্কের ক্ষমতা বাড়াতে কিছু মশলা এবং গাছের পাতা দারুন কাজে আসে। একাধিক গবেষণায় দেখা গেছে এই মশলাগুলি প্রতিদিন খেলে মস্তিষ্কের কর্মক্ষমতা বৃদ্ধি পায়, ফলে বুদ্ধি ও স্মৃতিশক্তি উভয়ই ধীরে ধীরে বাড়তে শুরু করে। চিকিৎসা শাস্ত্র ঘাটলেই জানতে পারবেন, যখন আধুনিক চিকিৎসার জন্ম হয়নি, সেই সময় থেকেই শরীরের নানা সমস্যায় আয়ুর্বেদিক চিকিৎসা দারুন কাজে আসত। আজ আধুনিক চিকিৎসার দাপাদাপিতে এই সুপ্রাচীন চিকিৎসা বিদ্য়া কিছুটা পিছনের সারিতে চলে গেলেও এর কার্য়কারিতা সম্পর্কে আজও প্রশ্ন তোলা বোকামি হবে। এই প্রবন্ধে যে মশলাগুলির প্রসঙ্গে আলোচনা করা হল সেগুলি ব্রেন সেলের জন্মহার বাড়িয়ে দিয়ে মস্তিষ্কের ক্ষমতা বৃদ্ধি করে, সেই সঙ্গে ব্রন সেলগুলিকে নিরাপত্তাও প্রদান করে। ফলে কোষগুলি ড্য়ামেজ হয়ে মস্তিষ্ক সম্পর্কিত নানা জটিল রোগ হওয়ার আশঙ্কা কমে। আর শরীরের কমান্ড সিস্টেম বা কন্ট্রোল প্যানেল যখন চাঙ্গা হয়ে ওঠে, তখন সার্বিকভাবে শরীরও সুন্দর হতে শুরু করে। তাই তো সুস্থভাবে বাঁচতে মস্তিষ্কের খেয়াল রাখাটা একান্ত প্রয়োজন। আর এই কাজেই আপানকে সাহায্য করতে পারে আপনার রান্না ঘরে জায়গা করে নেওয়া অতি সাধারণ কিছু মশলা। তবে, কেউ যদি কোনও জটিল রোগে আক্রান হন, তাহেল এই মশলাগুলি খাওয়ার আগে একবার চিকিৎসকের সঙ্গে পরামর্শ করে নেবেন। তাতে অন্য সমস্যা হওয়ার আশঙ্কা কমবে।

১. রোজমেরি: সেই সুপ্রাচীন কাল থেকে নানা ধরনের রোগ সারাতে আয়ুর্বেদিক ঔষুধিতে এই হার্বটির ব্যবহার হয়ে আসছে। এটি মস্তিষ্কের স্বাস্থ্যরক্ষা করে, ফলে ব্রেনের কর্মক্ষমতা বৃদ্ধি পায়, সেই সঙ্গে বাড়ে ব্রেন পাওয়ারও।

২. গোল মরিচ: শরীরকে রোগমুক্ত রাখার পাশপাশি মস্তিষ্কের কার্যকারিতা বাড়াতেও এই মশলাটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে। তাই তো আজ থেকেই গোলমরিচ কেন্দ্রিক নতুন নতুন রেসিপি শিখে বানাতে শুরু করে দিন। দেখবেন অল্প দিনেই ফল পেতে শুরু করে দেবেন।

৩. থাইম গুল্ম: এতে এমন কিছু উপাদান রয়েছে, যা মস্তিষ্কের উন্নতি ঘটানোর পাশাপাশি মনোযোগ বাড়াতেও সাহায্য করে। তবে প্রতিদিন খেতে হবে এই ঔষধি গুল্মটি, তবেই কিন্তু ভাল ফল পাবেন।

৪. ভূই-তুলসি: ব্রেন ফাংশন বাড়াতে এই গাছড়াটি দারুন কাজে আসে। তাই তো এটি নিয়মিত খেলে দারুন ফল পাওয়া যায়।

৫. হলুদ: এই মশলাটি এমন কিছু উপাদান রয়েছে যা ব্রেনের ক্ষমতা বৃদ্ধি করতে দারুন কাজে আসে। সেই সঙ্গে মস্তষ্কের কর্মক্ষমতারও বৃদ্ধি ঘটায়।

৬. মিন্ট পাতা: মস্তিষ্ককে চাঙ্গা করে তুলতে এই হার্বটি কার্যকরী ভূমিকা নেয়। প্রতিদিন এক কাপ করে পিপামেন্ট চা খান। তাহলেই দেখবেন শরীরে বয়সের ছাপ পড়লেও মস্তিষ্কের কর্মক্ষমতায় কোনও দিন কোনও পরিবর্তনই আসবে না।

৭. জায়ফল: বিরিয়ানিতে ব্যবহৃত এই মশলাটি ব্রেন পাওয়ার বাড়াতে দারুন কাজে আসে। এমনকী একাদিক স্টাডিতে এও দেখা গেছে যে ব্রন সেলগুলিকে সুস্থ রাখতেও এটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে।

৮. ক্যামোমিল: একাধিক গবেষণায় দেখা গেছে ব্রেনকে উদ্দিপিত করে তার কর্মক্ষমতা বাড়াতে এটি দারুন কাজে দেয়। তাই যদি প্রতিদিন কয়েক কাপ ক্য়ামোমিল টি খাওয়া যায়, তাহলে মস্তিষ্কের স্বাস্থ্য ভাল হতে শুরু করে। ফলে মনোযোগ যেমন বাড়ে, তেমনি বুদ্ধি এবং স্মৃতিশক্তিরও উন্নতি ঘটে।

৯. লবঙ্গ: স্ট্রেস বা মানসিক চাপ কমাতে এটি দারুন কাজে আসে। শুধু তাই নয় সার্বিকভাবে মস্তিষ্কের উন্নতি ঘটিয়ে বুদ্ধি এবং স্মৃতিশক্তির উন্নতি ঘটাতেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে। প্রসঙ্গত, মানসিক চাপ যত বাড়ে, তত মস্তিষ্কের অন্দরে আঘাতের সংখ্যাও বাড়তে শুরু করে, ফলে কমে ব্রেনের কাজ করার ক্ষমতা। তাই এই বিষয়টির দিকে খেয়াল রাখাটাও জরুরি।

১০. দারচিনি: শরীরকে নানাভাবে সুস্থ রাখতে এই মশলাটির কোনও বিকল্প আছে বলে তো মনে হয় না। শুধু তাই নয় মস্তিষ্কের ক্ষমতা বাড়াতেও দারচিনি দারুন কাজে আসে। কাধিক গবেষণায় দেখা গেছে প্রতিদিন এই মশলাটি খেলে নানা রকমের জটিল নিউরোলজিকাল সমস্যা হওয়ার আশঙ্কা বহু গুণে কমে যায়। সেই সঙ্গে নার্ভাস সিস্টেমকে প্রয়োজনীয় পুষ্টি প্রদান করে ব্রেন পাওয়ারেরও বৃদ্ধি ঘটায়।

Random Post