সাবধান: বাজার থেকে কেনা প্রায় প্রতিটি সবজি এবং ফলেই রয়েছে বিষ!

ডাক্তাররা প্রতিনিয়ত বলে চলেছেন সুস্থ থাকতে প্রতিদিন খাওয়া শুরু করুন সবুজ শাক-সবজি এবং ফল। এদিকে লাভের অঙ্ক বাড়ানোর চক্করে একদল এই সব প্রকৃতিক উপাদানে মিশিয়ে চলেছে প্রচুর মাত্রায় কেমিকাল, যা মানব শরীরের অন্দরে প্রবেশ করার পর একাধিক মারণ রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা বাড়াচ্ছে। এমন পরিস্থিতিতে কী কী কেমিকাল কোন কোন সবজি এবং ফলে মেশানো হচ্ছে সে বিষয়ে জেনে না নিলে কিন্তু বেজায় বিপদ! সম্প্রতি ফুড সেফটি অ্যান্ড স্ট্যান্ডার্ড অথোরিটি অব ইন্ডিয়া (এই এস এস এ আই)-এর গবেষকদের মতে মাত্রাতিরিক্ত পরিমাণে ফ্লরোইড, পটেটো প্রোটিন সহ একাধিক রাসায়নিক মেশানো হচ্ছে বিভিন্ন ফলে এবং সবজিতে, যা একেবারেই করা উচিত নয়। এই কারণেই তো ভারতীয়দের এই বিষয়ে সচেতন হওয়ার পরামর্শ দিচ্ছেন বিশেষজ্ঞরা। কারণ অমৃত যখন বিষে পরিণত হয়, তখন সাবদান না হলে যে অকালে প্রাণ চলে যাওয়ার আশঙ্কা বাড়ে, তা নিশ্চয় আর বলে দিতে হবে না। প্রসঙ্গত, "পেডিয়াট্রিক্স" নামক একটি পত্রিকায় হওয়ার্ড ইউনির্ভাসিটির গবেষকদের প্রকাশিত গবেষণায় এমনটা দাবি করা হয়েছে যে বাজারে বিক্রি হওয়া নানাবিধ ফলে বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই অর্গেনোফসপেট নামক একটি উপাদান মেশানো হয়ে থাকে, যার প্রভাবে বাচ্চাদের ব্রেন পাওয়ার কমে যেতে শুরু করে। সেই সঙ্গে আরও অনেক শারীরিক ক্ষতি হয়। তবে এখানেই শেষ নয়, শাক-সবজি এবং ফলে আরও অনেক ধরনের কেমিকাল মেশানো হয়ে থাকে। যাদের প্রভাবে কী কী হতে পারে জানেন?

১. ফ্লরোইড: একাধিক কেস স্টাডি করে দেখে গেছে ফল, আপেলর রস,আঙুরের রস, টমাটো সস, স্যালাড, সোডা, টুথপেস্ট এবং মাউথওয়াশে এই রাসায়নিকটি প্রচুর মাত্রায় থাকে, যা শরীরে প্রবেশ করতে করতে স্টামাকের তো মারাত্মক ক্ষতি করেই, সেই সঙ্গে থাইরয়েড, আর্থ্রাইটিস, ডিমেনশিয়া, নানাবিধ হাড়ের রোগ এবং দাঁতের ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কা বৃদ্ধি পায়। তাই এবার থেকে এইসব খাবার এবং টুথপেস্ট কেনার আগে ভাল করে জেনে নেবেন, তাতে এই ক্ষতিকর রাসায়নিকটি রয়েছে কিনা।

২. পটেটো প্রোটিন: বিশেষজ্ঞরা পরীক্ষা করে দেখেছেন অনেক ক্ষেত্রেই আলুর শরীরে উপস্থিত প্রকৃতিক প্রোটিন বার করে নেওয়া হয়। পরিবর্তে আলুর শরীরে ঢুকিয়ে দেওয়া হয় অ্যানিমেল প্রোটিন। এমনটা কেন করা হয় জানেন? কারণ এমনটা করলে আলু খাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে পেট ভরে যায় এবং অনেকক্ষণ পেট ভরা থাকে। সেই সঙ্গে স্বাদও বাড়ে। কিন্তু এইভাবে অনিয়ন্ত্রিত হারে অ্যানিমেল প্রোটিন শরীরে প্রবেশ করা একেবারেই উচিত নয়। কারণ এমনটা হলে কিডনির মারাত্মক ক্ষতি হয়, সেই সঙ্গে নানাবিধ কিডনি ডিজিজে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কাও বৃদ্ধি পায়।

৩. ইউলো বার্ক: সাধারণত চা এবং নানাবিধ হার্বাল প্রডাক্টে এই উপাদানটি মেশানো হয়ে থাকে। এফ এস এস এ আই-এর গবেষকদের মতে ইউলো বার্কের শরীরে উপস্থিত নানা উপাদান অনেকটা এসপিরিন ওষুধের মতো কাজ করে। তাই তো এই হার্বটি বেশি মাত্রায় শরীরে প্রবেশ করলে রক্ত পাতলা হতে শুরু করে। সেই সঙ্গে হঠাৎ করে মৃত্যুর আশঙ্কা বৃদ্ধি পায়। তাই পরিচিত দোকান ছাড়া ভুলেও চা কিনবেন না যেন! না হলে কিন্তু...!

৪. পি কিউ কিউ: পইরোলোকিউনোলিন কুইনাইন বা পি কিউ কিউ নামক এই উপাদানটি অনেক সময়ই দুধ এবং ডায়াটারি প্রডাক্টে মেশানো হয়ে থাকে। এমনিতে কোনও সমস্যা না করলেও বেশি মাত্রায় যদি এই উপাদানটি শরীরে প্রবেশ করতে থাকে, তাহলে কিডনি এবং লিভারের কর্মক্ষমতা কমে যেতে শুরু করে। সেই সঙ্গে শরীরের অন্দরেও আরও নানা ধরনের ক্ষতি হয়ে থাকে। তাই এই বিষয়েও সচেতন থাকাটা জরুরি।

৫. লেমন বাল্ম: এটি এক ধরনের হার্ব, যা হার্বাল টি, আইস ক্রিম, রেডিমেড মাছের পদে ব্যবহার করা হয়ে থাকে। অল্প মাত্রায় ব্যবহার করলে শারীরিক ক্ষতি হয় না ঠিকই, কিন্তু কতটা পরিমাণে লেমন বাল্ম ব্যবহার করা উচিত, সে বিষয়ে অনেকেই জানেন না। ফলে বেশি মাত্রায় মেশানোর কারণে শরীরের উপর বিরূপ প্রভাব পরে। সেই সঙ্গে মাথা ঘোরা, ক্লান্তি, ঘুমের মাত্রা বেড়ে যাওয়া এবং ব্রেন পাওয়ার কমে যাওয়ার মতো সমস্যাগুলি হয়ে থাকে। ৬. আর্টিফিশিয়াল রং: ৬. আর্টিফিশিয়াল রং: সবজি এবং ফলকে ক্রেতাদের চোখে আকর্ষণীয় করে তোলার জন্য দেদার এমন রং ব্যবহার করা হয়ে থাকে, যা শরীরে প্রবেশ করার পর এমন নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে শুরু করে যে ক্যান্সারের মতো মারণ রোগ শরীরে বাসা বাঁধার আশঙ্কা বেড়ে যায়। বিশেষত লাং, লিভার, থাইরয়েড এবং লিউকোমিয়ার মতো ক্যান্সারে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা বেড়ে যায়। সেই সঙ্গে মস্তিষ্কের উপরও খারাপ প্রভাব পরে।

Random Post