নিয়মিত পেঁয়াজ খাওয়া কি আদৌ স্বাস্থ্যকর?

হঠাৎ এমন প্রশ্ন কেন? আসলে বেশ কিছু বিশেষজ্ঞ নানা মহলে এমন এমন প্রশ্ন তুলতে শুরু করেছেন যে নিয়মিত পিঁয়াজ খেলে নাকি শরীরের মারাত্মক ক্ষতি হয়ে যায়। কিন্তু এমন দাবী কতটা বাস্তবসম্মত সে নিয়েও সন্দেহ রয়েছে বৈকি! পেঁয়াজের শরীরের ক্ষতি করে না উপকারে লাগে, এই উত্তর খুঁজতে হওয়া একাধিক গবেষণায় দেখা গেছে প্রতিদিন পেঁয়াজ খাওয়া শুরু করলে শরীরের অন্দরে এমন কিছু পরিবর্তন হতে শুরু করে যে তার প্রভাবে একাধিক উপকার পাওয়া যায়। আসলে পিঁয়াজে উপস্থিত অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, অ্যান্টিবায়োটিক, অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি এবং অ্যান্টি-হিস্টেমাইন প্রপাটিজ, নানাভাবে শরীরকে সুস্থ রাখতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে। এমনকী শরীর থেকে ক্ষতিকর টক্সিন বের করে দিতেও পিঁয়াজের কোনও বিকল্প নেই বললেই চলে। তবে এখানেই শেষ নয়, শরীরে উপস্থিত ক্ষতিকর কোলেস্টেরলের মাত্রা কমাতেও এই সবজিটি দারুন উপকারে লাগে। তাই তো বলি বন্ধু, দীর্ঘদিন যদি সুস্থভাবে বাঁচতে হয়, তাহলে সকাল-বিকাল কাঁচা পিঁয়াজ খেতে ভুলবেন না যেন!

১. রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে চলে আসে: একেবারেই ঠিক শুনেছেন বন্ধু! ডায়াবেটিসের মতো মারণ রোগকে দূরে রাখতে পেঁয়াজের কোনও বিকল্প হয় না বললেই চলে। আসলে এই সবজিটিতে উপস্থিত সালফার এবং কুয়েরসেটিন নামক উপাদান, শরীরে প্রবেশ করার পর এমন কিছু পরিবর্তন করে যে রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে চলে আসতে সময় লাগে না। তাই তো বলি বন্ধু, যাদের পরিবারে এই মারণ রোগের ইতিহাস রয়েছে, তারা সুস্থ থাকতে নিয়মিত কাঁচা পিঁয়াজ খেতে ভুলবেন না যেন!

২. হার্টের স্বাস্থ্যের উন্নতি ঘটে: একাধিক গবেষণায় দেখা গেছে যে পিঁয়াজে উপস্থিত ফ্ল্যাভোনয়েড শরীরে প্রবেশ করার পর এমন খেল দেখায় যে হার্টের ক্ষমতা বাড়তে শুরু করে। ফলে কোনও ধরনের কার্ডিওভাসকুলার ডিজিজে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা যেমন কমে, তেমনি হঠাৎ করে হার্ট অ্যাটাকের খপ্পরে পরার সম্ভাবনাও হ্রাস পায়। প্রসঙ্গত, গত কয়েক দশকে এদেশে কম বয়সিদের মধ্যে হার্ট অ্যাটাকের প্রকোপ যে হারে বেড়ছে, তাতে কাঁচা পিঁয়াজ খাওয়ার প্রয়োজনও যে বেড়ছে সে বিষয়ে কোনও সন্দেহ নেই!

৩. আঁচিল দূর হয়: একেবারেই ঠিক শুনেছেন বন্ধু! বেশ কিছু স্টাডিতে দেখা গেছে আঁচিলের সমস্যা কমাতে এই সবজিটি দারুন কাজে আসে। তবে তার জন্য প্রতিদিন রাত্রে শুতে যাওয়ার আগে গোল করে পেঁয়াজ কেটে আঁচিলের উপর রেখে একটা কাপড় বেঁধে দিতে হবে, যাতে সেটি পরে না যায়। এইভাবে নিয়মিত চিকিৎসা করলে দেখবেন অল্প দিনেই আঁচিল খসে পরে গেছে।

৪. পুড়ে যাওয়ার ক্ষত সারায়: রান্না করতে গিয়ে হাত পুড়ে যাওয়ার ঘটনা গৃহিণীদের সঙ্গে আকছারই ঘটে থাকে। কিন্তু এমন পুড়ে যাওয়ার ক্ষত চটজলদি কীভাবে সারানো যায়, সে সম্পর্কে কি জানা আছে? উত্তর যদি না হয়, তাহলে জেনে রাখুন বন্ধু এক্ষেত্রেও পিঁয়াজ কিন্তু দারুন কাজে আসে। এমন পরিস্থিতিতে ক্ষতস্থানে এক টুকরো পিঁয়াজ কিছু সময়ের জন্য রেখে দিন। এমনটা করলে দেখবেন অল্প সময়েই জ্বালা ভাব কমে যেতে শুরু করেছে, সেই সঙ্গে ক্ষত সেরে যেতেও সময় লাগবে না।

৫. সাইনাসের প্রকোপ কমায়: আপনিও কি এমন সমস্যায় জর্জরিত নাকি? তবে চিন্তার কোনও কারণ নেই বন্ধু! পরিবর্তে আজ থেকেই প্রতিদিন কাঁচা পিঁয়াজ খাওয়া শুরু করুন। দেখবেন সমস্যা কমতে সময় লাগবে না। প্রসঙ্গত, এক্ষেত্রে আরেকভাবেও পিঁয়াজকে কাজে লাগাতে পারেন। কীভাবে? চা বানানোর সময় তাতে অল্প করে আদা এবং পেঁয়াজ ফেলে জলটা ফুটিয়ে নিন। পরে সেই চা পান করুন। তাহলেও দেখবেন সাইনেসের প্রকোপ কমে গেছে।

৬. ক্যান্সারের মতো মারণ রোগকে দূরে রাখে: একাধিক গবেষণায় দেখা গেছে প্রতিদিন কাঁচা পিঁয়াজ খাওয়া শুরু করলে দেহের অন্দরে এমন কিছু উপকারি উপাদানের মাত্রা বৃদ্ধি পেতে শুরু করে যে ক্যান্সার সেল জন্ম নেওয়ার আশঙ্কা একেবারে কমে যায়। ফলে এমন মারণ রোগ ধারে কাছেও ঘেঁষতে পারে না। বিশেষত, ব্রেস্ট এবং কোলন ক্যান্সারের মতো রোগকে দূরে রাখতে পিঁয়াজের কোনও বিকল্প হয় না বললেই চলে।

৭. সর্দি-কাশির প্রকোপ কমে: একটা পেঁয়াজকে কেটে নিয়ে তার রস সংগ্রহ করে নিন। তারপর তাতে কয়েক ড্রপ মধু মিশিয়ে সেই মিশ্রন দিনে কম করে দুবার করে পান করা শুরু করুন। এমনটা কয়েকদিন যদি করতে পারেন, তাহলেই দেখবেন কাশির প্রকোপ কমতে শুরু করেছে। সেই সঙ্গে জ্বর এবং সর্দির মতো শারীরিক সমস্যা কমতেও দেখবেন সময় লাগবে না।

Random Post