হলুদ দাঁতকে ঝকঝকে সাদা করার ইচ্ছা আছে নাকি? তাহলে কাজে লাগাতে ভুলবেন না এই ঘরোয়া পদ্ধতিগুলিকে!


দাঁতের হলুদ ভাব কমিয়ে পুনরায় উজ্জ্বল সাদা করে তুলতে আধুনিক পদ্ধতির সাহায্য নেওয়া যেতেই পারে। কিন্তু একেবারে কম খরচে যদি দাঁতকে আগের অবস্থায় ফিরিয়ে আনতে চান, তাহলে আজ থেকেই এই প্রবন্ধে আলোচিত ঘরোয়া পদ্ধতিগুলিকে কাজে লাগানো শুরু করে দিন। দেখবেন অল্প দিনেই সুফল পেতে শুরু করেছেন। দাঁতের হলুদ ভাব কমাতে যে যে উপাদানগুলি দারুন কাজে আসে, সেগুলি হল...

১. হাইড্রোজেন পারঅক্সাইড: বেশ কিছু স্টাডিতে দেখা গেছে এই উপাদানটি রয়েছে এমন মাউথ ওয়াশ দিয়ে নিয়মিত শোয়ার আগে কুলকুচি করলে দাঁতের হলুদ আবরণ সরে যেতে সময় লাগে না। ফলে দাঁতের সৌন্দর্য বৃদ্ধি পায় চোখে পরার মতো। প্রসঙ্গত, মুখ গহ্বরে উপস্থিত ক্ষতিকর ব্যাকটেরিয়াদের মারতেও হাইড্রোজেন পারঅক্সাইড বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে।

২. কলার খোসা: একেবারে ঠিক শুনেছেন! কলার খোসার সাদা দিকটি দিয়ে নিয়মিত দাঁত ঘোষলে হলদেটে ভাব কেটে যেতে সময় লাগে না। তবে এক্ষেত্রে একটি বিষয় মাথায় রাখতে হবে। তা হল কলার খোসা দিয়ে দাঁত ঘষার পর হলকা গরম জল দিয়ে ভাল করে কুলকুচি করে নিতে ভুলবেন না যেন! কারণ এমনটা করলে দ্রুত ফল মেলে। প্রসঙ্গত, এইভাবে প্রতিদিন দাঁতের পরিচর্যা করলে দেখবেন অল্প দিনেই দাঁত ঝকঝকে সাদা হয়ে গেছে।

৩. নুন: দাঁতকে পরিষ্কার রাখতে সেই আদি কাল থেকে নুনের ব্যবহার হয়ে আসছে। আসলে এই উপাদানটি দাঁতের পুষ্টির ঘাটতি দূর করার পাশপাশি দাঁতের সৈন্দর্য বৃদ্ধিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে। তাই তো দাঁতের হলুদ ভাব কমাতেও নুনকে কাজে লাগানোর পরামর্শ দেন বিশেষজ্ঞরা। এক্ষেত্রে প্রতিদিন সকালে চারকোলের সঙ্গে নুন মিশিয়ে সেই মিশ্রন দিয়ে দাঁত মাজতে হবে। এমনটা কয়েক সপ্তাহ করলেই দেখবেন হলুদ আবরণ সরে গিয়ে দাঁতের হারিয়ে যাওয়া সৌন্দর্য ফিরে এসেছে। প্রসঙ্গত, বেকিং সেডার সঙ্গে নুন মিশিয়ে দাঁত মাজলেও সমান উপকার পাওয়া যায়।

৪. খাবার সোডা: দাঁতের হলদেটে ভাব কাটাতে খাবার সোডার কোনও বিকল্প হয় না বললেই চলে। এক্ষেত্রে প্রতিদিন সকালে টুথপেস্টের সঙ্গে অল্প করে বেকিং সোডা মিশিয়ে দাঁত মাজুন। তারপর গরম জল দিয়ে ভাল করে কুলকুচি করে মুখটা ধুয়ে নিন। সপ্তাহে ১-২ বার এই ঘরোয়া পদ্ধতিকে কাজে লাগিয়ে দাঁত মাজলে দারুন উপকার পাওয়া যায়। আর যদি এমন পদ্ধতিতে দাঁত মাজতে ইচ্ছা না করে, তাহলে পরিমাণ মতো খাবার সোডার সঙ্গে অল্প করে লেবুর রস এবং সাদা ভিনিগার মিশিয়ে একটা পেস্ট বানিয়ে নিন। এই পেস্টটি দিয়ে দাঁত মাজলেও সমান উপকার পাবেন।

৫. চারকোল: দাঁতের হলদে ভাব কমাতে যে যে উপাদানগুলি দারুন কাজে লাগে, সেগুলির মধ্যে অন্যতম হল চারকোল। আসলে এতে উপস্থিত বেশ কিছু কেমিক্যাল দাঁতকে পরিষ্কার রাখার পাশাপাশি হলদে ভাব কমাতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে। এখন প্রশ্ন হল, এক্ষেত্রে কীভাবে ব্যবহার করবেন চারকোলকে? রোজের ব্যবহৃত টুথপেস্টে অল্প করে চারকোল গুঁড়ো মিশিয়ে ব্রাশ করুন। এমনটা কয়েকদিন করলেই দেখবেন সুফল পেতে শুরু করেছেন।

৬. কমলা লেবুর খোসা: দাঁতের সৌন্দর্য ফেরাতে কমলা লেবুর খোসা দারুন উপকারে লাগে। তাই তো প্রতিদিন রাতে শুতে যাওয়ার আগে অল্প করে কমলা লেবুর খোসা নিয়ে দাঁতে ঘষুন। এমনটা করলেই দেখবেন সমস্যা কমে যাবে। আসলে এই এতে উপস্থিত ভিটামিন-সি এবং ক্যালসিয়াম রাতভর দাঁতে জমতে থাকা মাইক্রোঅর্গানিজিমের সঙ্গে লড়াই চালায়। ফলে দাঁতের ক্ষতি হওযার আশঙ্কা যেমন কমে, তেমনি ধীরে ধীরে হলদেটে আবরণও সরে যেতে শুরু করে।

৭. তুলসি পাতা: বেশি করে তুলসি পাতা নিয়ে সেগুলিকে রোদে শুকিয়ে নিন। যখন দেখবেন পাতাগুলি একেবারে শুকিয়ে গেছে তখন সেগুলি বেটে একটা পাউডার বানিয়ে ফেলুন। এই পাউডারের সঙ্গে টুথপেস্ট মিশিয়ে ব্রাশ করলে দাঁতের হলুদ ভাব একেবারে চলে যায়। সেই সঙ্গে পায়োরিয়া, ক্যাভিটিসহ আরও সব দাঁতের রোগের প্রকোপও হ্রাস পায়।

৮. স্ট্রবেরি: কমলা লেবুর মতো স্ট্রেবেরিতেও রয়েছে প্রচুর পরিমাণ ভিটামিন-সি, যা এই ধরনের সমস্যা কমাতে দারুন কাজে আসে। এক্ষেত্রে কয়েকটি স্ট্রবেরিকে পিষে নিয়ে পেস্ট বানিয়ে নিন। তারপর সেই পেস্ট দাঁতে লাগান। এমনটা কয়েক সপ্তাহ করলেই দেখবেন হলদেটে ভাব কমে গিয়ে দাঁত আগের অবস্থায় ফিরে এসেছে।

৯. আপেল: প্রতিদিন আপেল খাওয়া শুরু করুন। তাহলেই দেখবেন দাঁতের হলুদ ভাব একেবারে কমে যাবে। আসলে এই ফলটিতে উপস্থিত একাধিক স্বাস্থ্যকর অ্যাসিড দাঁতের হলদেটে আবরণকে নিমেষে তুলে দিতে দারুন কাজে আসে। তাই উজ্জ্বল সাদা দাঁত পেতে আজ থেকেই দিনে কম করে দুটি আপেল খাওয়া শুরু করুন।

১০. লেবু: এই ফলটিতে উপস্থিত ব্লিচিং প্রপাটিজ দাঁতের সৌন্দর্য ফিরিয়ে আনতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে। এক্ষেত্রে পরিমাণ মতো লেবুর রসে অল্প করে নুন মিশিয়ে সেই রস দিয়ে মুখ কুলি করলে দাঁতের হলুদ ভাব কমে যেতে শুরু করে। আরেক ভাবেও লেবুকে কাজে লাগাতে পারেন। প্রতিদিন লেবুর দিয়ে দাঁত ঘষুন। কয়েক সপ্তাহ টানা এমনটা করলেই দেখবেন সমস্যা কমতে শুরু করে দিয়েছে।

Random Post