বাদাম তেল খেলে কি হতে পারে জানা আছে?


শরীরকে রোগমুক্ত রাখতে আমাদের আশেপাশে এত কিছু রয়েছে, তবু দেখুন কথায় কথায় আমরা ডাক্তারের কাছে ছুটি। আর দিনের শেষে একগাদা টাকা খরচ করে ব্যাগ ভর্তি করে মোটু মোটু সব ট্যাবলেট নিয়ে আসি, যেগুলি খেলে রোগ কমে ঠিকই। কিন্তু সেই সঙ্গে শরীরেরও তো বেশ ক্ষতি হয়, তাই না! তাই তো এবার থেকে অ্যালোপ্য়াথি মেডিসিনের পরিবর্তে প্রকৃতির শরীরে তৈরি নানা ঔষধিকে কাজে লাগিয়ে দেখুন না, এমনটা করলে উপকার যে পাবেন, সে বিষয়ে কোনও সন্দেহ নেই কিন্তু! শরীরকে সচল এবং রোগমুক্ত রাখতে যত ধরনের পুষ্টিকর উপাদানের প্রয়োজন পরে, তার বেশিরভাগই উপস্থিত রয়েছে বাদাম তেলে। তাই তো রোগ মুক্ত জীবন পেতে এই প্রকৃতিক উপাদানটিকে কাজে লাগিয়ে দেখতে পারেন। স্বাদে মিষ্টি এই তেলটিতে রয়েছে প্রচুর মাত্রায় উপকারি ফ্যাট, যা হার্টের স্বাস্থ্যের উন্নতিতে কাজে আসে। সেই সঙ্গে রয়েছে ফাইবার, ভিটামিন এবং মিনারেল, যা নানা ভাবে শরীরের কাজে লাগে। প্রসঙ্গত, নিয়মিত এই তেলটি খাওয়া শুরু করলে যে যে শরীরিক উপকার পাওয়া যায়, সেগুলি হল...

১. খারাপ কোলেস্টেরলের মাত্রা কমায়: হার্টকে চাঙ্গা রাখতে একটা বিষয়ে খেয়াল রাখতে হবে যে রক্তে যেন খারাপ কোলেস্টেরলের মাত্রা কোনও ভাবেই বেড়ে না যায়। আর এই কাজটি করতে কাজে লাগাতেই পারেন বাদাম তেলকে। কারণ এই তেলটির অন্দরে উপস্থিত একাধিক উপকারি উপাদান শরীরে প্রবেশ করার পর উপকারি কোলেস্টেরল বা এল ডি এল-এর মাত্রা বাড়িয়ে তোলে। ফলে স্বাভাবিকভাবেই খারাপ কোলেস্টেরলের মাত্রা কমতে শুরু করে। প্রসঙ্গত, বাদাম তেলে থাকা ভিটামিন ই-ও এক্ষেত্রে বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে। এই ভিটামিনটি হার্টের কর্মক্ষমতা এতটা বাড়িয়ে তোলে যে কোনও ধরনের কার্ডিওভাসকুলার ডিজিজ ধারে কাছে ঘেঁষতে পারে না।

২. ডায়াবেটিস রোগকে দূরে রাখে: শরীরে যখন পর্যাপ্ত পরিমাণে ইনসুলিনের উৎপাদন বন্ধ হয়ে যায়, তখনই রক্তে সুগার লেভেল বাড়তে শুরু করে। নানা কারণে এমনটা ঘটতে পারে। কিন্তু নিয়মিত যদি বাদাম তেল খেতে পারেন, তাহলে কিন্তু এমন ধরনের পরিস্থিতির সম্মুখিন হওযার আশঙ্কা একেবারে কমে যায়। কারণ বাদাম এবং বাদাম তেলে উপস্থিত নানা উপকারি উপাদান কোনও ভাবেই রক্তে শর্করার মাত্রা বাড়তে দেয় না। ফলে টাইপ- ২ ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা একেবারে কমে যায়। আসলে বাদাম তেল খাওয়া মাত্র ইনসুলিনের উৎপাদন বাড়তে শুরু করে। ফলে ব্লাড সুগার লেভেল বেড়ে যাওয়ার কোনও সম্ভাবনাই থাকে না।

৩. ওজন বাড়ায়: ঠিক মতো খাওয়া-দাওয়া না করার কারণে কি ওজন কমেছে চোখে পরার মতো? তাহলে তো বন্ধু আজ থেকেই বাদাম নয়তো বাদাম তেল খাওয়া শুরু করতে হবে। এমনটা করলে দেখবেন শরীর ভিতর এবং বাইরে থেকে চাঙ্গা হয়ে উঠতে সময়ই লাগবে না। আসলে নিয়মিত বাদাম তেল খেলে ধীরে ধীরে ওজন বাড়তে শুরু করে, তবে এই ওজন বৃদ্ধি এতটা স্বাস্থ্যকরভাবে হয় যে শরীরের কোনও ধরনের ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কাই থাকে না।

৪. কলোন এবং রেকটামের কর্মক্ষমতা বাড়ে: বেশ কিছু গবেষণায় দেখা গেছে নিয়মিত বাদাম তেল খাওয়া শুরু করলে শরীরের অন্দরে ফাইবার এবং অন্যান্য উপকারি উপাদানের মাত্রা বাড়তে শুরু করে, যা রেকটাম এবং কলোনের পাশাপাশি সামগ্রিকভাবে ডায়জেস্টিভ সিস্টেমের কর্মক্ষমতা বাড়াতেও বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে। সেই সঙ্গে কলোন ক্যান্সারকে দূরে রাখতেও সাহায্য করে। প্রসঙ্গত, চিকিৎসকেদের মতে রোজের ডেয়েটে বাদাম তেলকে অন্তর্ভুক্ত করলে ইরিটেবল বাওয়েল সিন্ড্রমের মতো রোগের প্রকোপ কমে যেতেও সময় লাগে না।

৫. ত্বকের সৌন্দর্য বাড়ায়: স্ট্রেস, পরিবেশ দূষণ এবং অন্যান্য নানা কারণে কি ত্বকের হাল একেবারে বেহাল হয়ে গেছে? তাহলে তো বন্ধু আজ থেকেই রাত্রে শোয়ার আগে অল্প করে বাদাম তেল নিয়ে মুখে এবং সারা শরীরে লাগিয়ে ভাল করে মাসাজ করুন। দেখবেন ত্বকের হারিয়ে যাওয়া সৌন্দর্য ফিরে পেতে সময়ই লাগবে না। আসলে বাদাম তেলে উপস্থিত অ্যান্টিঅক্সিডেটিভ প্রপাটিজ একদিকে যেমন অতি বেগুনি রশ্মির হাত থেকে ত্বককে রক্ষা করে, তেমনি ত্বকের বয়স কমাতেও বিশেষ ভূমিকা নেয়। প্রসঙ্গত, বাদাম তেলে উপস্থিত ভিটামিন এ, ব্রণর মতো ত্বকের রোগের প্রকোপ কমাতে যেমন সাহায্য করে, তেমনি ডার্ক সর্কেল এবং একজিমার মতো রোগের চিকিৎসাতেও বিশেষ ভূমিকা নিয়ে থাকে। কীভাবে বাদাম তেলকে কাজে লাগাতে হবে? কীভাবে বাদাম তেলকে কাজে লাগাতে হবে? যে বাদাম তেলটি খাওয়ার যোগ্য়, সেটি প্রতিদিন ২-৩ চামচ করে খেতে হবে। তাহলেই দেখবেন উপকার মিলতে শুরু করেছে। আর যে তেলটি শুধু এক্সটার্নাল ইউজের জন্য, তা অল্প করে হাতে নিয়ে মুখে এবং সারা শরীরে লাগিয়ে ভাল করে মাসাজ করতে হবে। প্রসঙ্গত, বাদাম তেল কেনার আগে খেয়াল রাখবেন যে খাওয়ার এবং ত্বকে লাগানোর তেল কিন্তু এক নয়।

Random Post