সকালে ডিম খাওয়ার অভ্যাস আছে নাকি?


সম্প্রতি হওয়া একটি সমীক্ষায় দেখা গেছে কর্মব্যস্ত যুবসমাজের এক বড় অংশই সকাল সকাল পেট ভরাতে ডিমের উপর ভরসা রেখে থাকেন। তাই তো বিভিন্ন মহলে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে যে এইভাবে সাকালে খালি পেটে ডিম খাওয়া কি আদৌ শরীরের পক্ষে উপকারি?

এই প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে গবেষণা কম হয়নি। তাতে যা জানা গেছে তা বেজায় চমকপ্রদ। গবেষকদের মতে প্রতিদিন ব্রেকফাস্টে ডিম খাওয়া শুরু করলে দেহের অন্দরে প্রোটিন, ভিটামিন, ফসফরাস, সেলেনিয়াম এবং আরও সব কার্যকরি উপাদানের পরিমাণ বাড়তে শুরু করে। যার প্রভাবে একাধিক রোগ দূরে পালায়। যেমন ধরুন...


১. কোলিন নামক একটি উপকারি উপাদানের ঘাটতি মেটে:
বেশ কিছু স্টাডিতে দেখা গেছে প্রতিদিন ডিম খাওয়া শুরু করলে শরীরের অন্দরে কোলিনের মাত্রা বৃদ্ধি পেতে শুরু করে, যার প্রভাবে নার্ভের ক্ষমতা যেমন বাড়ে, তেমনি আরও নানাবিধ উপকার মিলতে শুরু করে, যেমন ধরুন- পেশির ক্ষমতা বাড়ে এবং হজম ক্ষমতা উন্নতি ঘটতে শুরু করে। তাই তো বলি বন্ধু, সার্বিকভাবে শরীরকে চাঙ্গা রাখতে যদি চান, তাহলে প্রতিদিন ব্রেকফাস্টে একটা করে ডিম খেতে ভুলবেন না যেন!

২. ক্যান্সারের মতো মারণ রোগ দূরে থাকে:
বেশ কিছু স্টাডিতে দেখা গেছে ডিমের অন্দরে উপস্থিত কোলিন শরীরে প্রবেশ করার পর এমন খেল দেখায় যে ক্যান্সার সেলের জন্ম নেওয়ার আশঙ্কা একেবারে কমে যায়। ফলে এমন মারণ রোগ ধারে কাছেও ঘেঁষতে পারে না। বিশেষত ব্রেস্ট ক্য়ান্সারে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা একেবারে থাকে না বললেই চলে।

৩. ব্রেন পাওয়ার বৃদ্ধি পায়:
বুদ্ধির জোর বারাতে কে না চায় বলুন! আপনিও যদি সেই দলে থাকেন, তাহলে কাল সকাল থেকেই ডিম খাওয়া শুরু করুন। আসলে ডিমে উপস্থিত বেশ কিছু পুষ্টিকর উপাদান মস্তিষ্কের ক্ষমতা মারাত্মক বাড়িয়ে দেয়। ফলে একদিকে যেমন বুদ্ধির বিকাশ ঘটে, তেমনি স্মৃতিশক্তি এবং মনোযোগও বৃদ্ধি পায়। প্রসঙ্গত, ডিমে কোলিন নামে একটি উপাদান থাকে, যা এক্ষেত্রে বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে।

৪. হার্টের স্বাস্থ্য়ের উন্নতি ঘটে:
একাধিক গবেষণায় দেখা গেছে নিয়মিত ডিম খাওয়া শুরু করলে দেহের অন্দরে উপকারি কোলেস্টেরলের মাত্রা বৃদ্ধি পেতে শুরু করে। ফলে কোনও ভাবেই হার্টের ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কা থাকে না। সেই সঙ্গে হার্টের রোগে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনাও কমে। তাই তো বলি বন্ধু, যাদের পরিবারে হার্টের রোগের ইতিহাস রয়েছে, তারা প্রতিদিন ব্রেকফাস্টে ডিম খেতে ভুলবেন না যেন!

৫. প্রোটিনের ঘাটতি দূর হয়:
ডিমে উপস্থিত অ্যালবুমিন নামে এক ধরনের প্রোটিন পেশির গঠনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে। তাই এনার্জি বৃদ্ধির পাশাপাশি শরীরের অভ্যন্তরীণ ক্ষমতা বৃদ্ধির জন্যও সকাল সকাল ডিম খাওয়াটা জরুরি। প্রসঙ্গত, যারা সকালে নিয়মিত শরীরচর্চা করেন, তারা ডিম খেতে ভুলবেন না যেন! এমনটা করলে দেখবেন একাধিক রোগ আপনার ধারে কাছেও ঘেঁষতে পারবে না।

৬. পুষ্টিকর উপাদানের ঘাটতি দূর হয়:
প্রতিদিন একটা করে ডিম খাওয়া শুরু করলে দেহের অন্দরে প্রোটিন এবং ভাটিমিনের চাহিদা তো মেটেই, সেই সঙ্গে ফসফরাস, সেলেনিয়াম, ক্যালসিয়াম এবং জিঙ্কের ঘাটতিও দূর হয়। ফলে শরীরে কর্মক্ষমতা বৃদ্ধি পেতে সময় লাগে না। প্রসঙ্গত, সেলেনিয়াম হল এমন একটি উপাদান, যা শরীরকে রোগমুক্ত রাখতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে। এবার বুঝেছেন তো বন্ধু নিয়মিত ডিম খাওয়ার প্রয়োজন কতটা!

৭. নিমেষে ক্ষিদে মেটে:
ব্রেকফাস্টে দুটো ডিমের অমলেট বা পোচ খেয়ে দেখুন তো কী হয়! দেখবেন দুপুরের আগে ক্ষিদে পাওয়ার নামই নেবে না। তাই যাদের সকাল সকাল অফিসে বেরতে হয়, তারা ব্রেকফাস্ট না করার পরিবর্তে দুটো ডিম সেদ্ধ খেয়ে বেরিয়ে পরুন। তাহলেই দেখবেন কেল্লাফতে! এমনটা করলে শরীরের অন্দরে ভাঙন তো ঘটবেই না, উল্টে ক্ষিদের জ্বালা কমবে এবং পুষ্টির ঘাটতি দূর হবে।

৮. এনার্জির চাহিদা মেটে:
সকাল ঘুম থেকে ওঠার পর ঠিক কোনও জিনিসটার বেশি করে প্রয়োজন পরে বলুন তো? আরে মশাই এনার্জির! একেবারেই ঠিক। তাই তো দাঁত মাজার পর টপ করে একটা ডিম সেদ্ধ খেয়ে নিতে হবে। তাহলেই দেখবেন ক্লান্তি তো দূর হবেই, সেই সঙ্গে কর্মক্ষমতাও বৃদ্ধি পাবে। আসলে ডিমে উপস্থিত স্বাস্থ্যকর ফ্যাট এবং অন্যান্য পুষ্টিকর উপাদান নিমেষে দেহের প্রয়োজনীয় জ্বালানির চাহিদা পূরণ করে। ফলে শরীরের চনমনে হয়ে উঠতে একেবারে সময়ই লাগে না।

৯. ওজন কমে চোখে পরার মতো:
একেবারেই ঠিক শুনেছেন। ডিম খেলে ওজন বাড়ে না। বরং কমে! পেনিংটন বায়োমেডিকাল রিসার্চ সেন্টারের করা এক গবেষণায় একথা প্রমাণিত হয়ে গেছে যে সকাল সকাল ডিম খেলে দিনের অনেকটা সময় পর্যন্ত ক্ষিদে পায় না। ফলে খাওয়ার পরিমাণ কমতে শুরু করে। সেই সঙ্গে শরীরে মাত্রাতিরিক্ত ক্যালরি জমার সম্ভাবনাও হ্রাস পায়। ফলে স্বাভাবিকবাবেই ওজন কমতে শুরু করে। তাই যারা ওবেসিটির সমস্যায় ভুগছেন, তারা নিয়ম করে ব্রেকফাস্টে ডিম খাওয়া শুরু করুন। দেখবেন উপকার পাবেন। প্রসঙ্গত, পোচ অথবা সেদ্ধ ডিম খাওয়ার চেষ্টা করবেন। তাতে বেশি উপকার পাওয়া যায়।

১০. দৃষ্টিশক্তির উন্নতি ঘটে:
ডিমে উপস্থিত অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট, লুটিন এবং জিয়েক্সসেনথিন নামে বেশ কিছু উপকারি উপাদান দৃষ্টিশক্তির উন্নতিতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে। সেই সঙ্গে ছানি হওয়ার আশঙ্কাও কমায়।

Random Post