রুদ্রাক্ষের মালা পড়লে কত ধরনের শারীরিক উপকার পাওয়া যায় জানা আছে?

ইন্দোনেশিয়া, নেপাল, জাভা, সুমাত্রা এবং মায়েনমারেই বেশি মাত্রায় জন্ম নেওয়া রুদ্রাক্ষ গাছের ফল দিয়ে বানানো মালা পড়লে একাধিক শারীরিক উপকার পাওয়া যায়। তাই তো আয়ুর্বেদ শাস্ত্রে রুদ্রাক্ষকে সঞ্জীবনী হিসেবে গণ্য করা হয়ে থাকে। নানাবিধ প্রাচীন পুঁথি ঘেঁটে জানতে পারা যায়, একাধিক শারীরিক সমস্যার নিবারণে এই প্রকৃতিক উপাদানটিকে কাজে লাগানো যেতে পারে। শুধু তাই নয়, পনীয় জলে কোনও বিষাক্ত উপাদান মেশানো আছে কিনা, তা জানতেও রুদ্রাক্ষকে কাজে লাগানো যেতে পারে। কিন্তু কীভাবে এই কাজটি করে রুদ্রাক্ষ? নানাবিধ প্রাচীন পুঁথি ঘেঁটে জানতে পারা যায়, পানীয় জলের উপর রুদ্রাক্ষের মালাকে ভাসিয়ে দেওয়ার পর তা যদি ঘড়ির কাঁটার বিপরীত দিকে ঘুরতে থাকে, তাহলে বুঝতে হবে জলে কোনও বিষাক্ত উপাদান আছে। আর যদি রুদ্রাক্ষটি ঘড়ির কাঁটার দিকে ধোরে, তাহলে বুঝতে হবে জলটি পানের যোগ্য। এখানেই শেষ নয়, এই প্রবন্ধে রুদ্রাক্ষের মালার এমনই কিছু উপকারিতা সম্পর্কে আলোচনা করা হল, যা পড়তে পড়তে আপনি অবাক হয়ে যাবেনই! কী কী উপকারে লাগে এই প্রকৃতিক উপাদানটি?

১.নেগেটিভ এনার্জির হাত থেকে রক্ষা করে: সবাই আমাদের ভাল চায়, এমন নয় কিন্তু! অনেকেই আছেন যারা প্রতি মুহূর্তে আমাদের ক্ষতি করার চেষ্টায় লেগে রয়েছে। এমন খারাপ চিন্তা বা নেগেটিভিটির কারণে যাতে কানও ক্ষতি না হয়, সেদিকে খেয়াল রাখে রুদ্রাক্ষের মালা। ফলে শরীরের কোনও ধরনের ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কা হ্রাস পায়।

২. মনসংযোগ বাড়ায়: অনেকেই আছেন যারা প্রাণয়ম করার সময় রুদ্রাক্ষের মালা যপ করে থাকেন। কেন এমনটা করা হয় জানেন? প্রাচীন গ্রন্থানুসারে রুদ্রাক্ষ আমাদের শরীরের সংস্পর্শে এলে মনকে বিষ মুক্ত করে। সেই সঙ্গে শরীরের প্রতিটি চক্রকে অ্যাকটিভেট করার মধ্যে দিয়ে মনসংযোগ বাড়াতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে। তাই তো স্ট্রেস এবং মানসিক অবসাদ কমাতে প্রতিদিন এক মনে রুদ্রাক্ষের মালা জপার পরামর্শ দেওয়া হয়ে থাকে।

৩. স্মৃতিশক্তির উন্নতি ঘটায়: আধুনিক কালে হওয়া একাধিক গবেষণায় দেখা গেছে স্মৃতিশক্তির উন্নতিতে রুদ্রাক্ষের মালা বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে। এক্ষেত্রে চার মুখি এবং ছয় মুখি রুদ্রাক্ষকে তামার তার দিয়ে একসঙ্গে বেঁধে মালা বানিয়ে পরতে হবে। এমনটা করলে অল্প সময়ের মধ্যেই দেখবেন মেমরি পাওয়ার মারাত্মক বৃদ্ধি পয়েছে। প্রসঙ্গত, ছোট বয়স থেকেই বাচ্চাদের এই নিয়ম মেনে যদি রুদ্রাক্ষের মালা পরানো যায়, তাহলে পড়াশোনায় তাদের দারুন উন্নতি ঘটে।

৪. যন্ত্রণা কমায়: রুদ্রাক্ষকে বেঁটে ক্ষত স্থানে লাগালে যন্ত্রণা কমতে একেবারেই সময় লাগে না। বিশেষত পোকা-মাকড়ের কামড় সংক্রান্ত কষ্ট কমাতে এই প্রকৃতিক উপাদানটির কোনও বিকল্প নেই বললেই চলে। তাই তো আজও হিমালয়ের পাদদেশে গড়ে ওটা গ্রামে-গঞ্জে রুদ্রাক্ষের মালাকে কাজে লাগিয়ে নানা ধরনের যন্ত্রণা কমানো হয়ে থাতে।

৫. হজম ক্ষমতার উন্নতি ঘটায়: আয়ুর্বেদ শাস্ত্রে উল্লেখ পাওয়া যায়, রুদ্রাক্ষ বেঁটে তার পাউডার জলে মিশিয়ে নিয়মিত খেলে পাকস্থলির কর্মক্ষমতা যেমন বাড়ে, তেমনি পাচক রসের ক্ষরণও বাড়াতে শুরু করে। ফলে নানাবিধ পেটের রোগের প্রকোপ কমতে শুরু করে। সেই সঙ্গে বদ-হজম এবং গ্য়াস-অম্বলের মতো সমস্যাও কমে।

৬. ব্লাড প্রেসারকে নিয়ন্ত্রণে রাখে: রুদ্রাক্ষের অন্দরে থাকা ইলেকট্রোম্যাগনেটিক প্রপাটিজ রক্তচাপকে নিয়ন্ত্রণে রাখতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে। শুধু তাই নয়, শরীরে তাপমাত্রাকে নিয়ন্ত্রণে রাখার মধ্যে দিয়ে স্ট্রেস এবং মানসিক চাপকে কমাতেও সাহায্য করে। প্রসঙ্গত, রক্তচাপ কমাতে নিয়মিত দু মুখি রুদ্রাক্ষকে বেঁটে সেই পাউডার জলের সঙ্গে মিশিয়ে খেলে দারুন উপকার পাওয়া যায়।

৭. ত্বকের রোগের প্রকোপ কমায়: নানাবিধ ত্বকের রোগের চিকিৎসায় যেমন রুদ্রাক্ষকে কাজে লাগানো যেতে পারে। তেমনি চোট-আঘাত সারাতে এবং অ্যালার্জির প্রকোপ কমাতেও এই প্রাকৃতিক উপাদানটি বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে। এক্ষেত্রে একটি রুদ্রাক্ষকে এক গ্লাস জলে ভিজিয়ে রাখার পর সকালে সেই জল পান করতে হবে। এমনটা নিয়মিত করতে পারলে দেখবেন দারুন উপকার পাবেন।

৮. জয়েন্ট পেন কমায়: সম পরিমাণে সরষের তেলের সঙ্গে রুদ্রাক্ষ পাউডার মিশিয়ে বানানো পেস্ট ব্যথা জায়গায় লাগালে নিমেষে কষ্ট কমে যায়। তাই তো যারা আর্থ্রাইটিসের সমস্যা ভুগছেন, তারা যদি এই ঘরোয়া চিকিৎসাটিকে কাজে লাগাতে পারেন, তাহলে কিন্তু দারুন উপকার পেতে পারেন।

Random Post