আপনার টুথপেস্টে বিষ নেই তো?


অবাক হচ্ছেন শুনে, তাই তো! জানি কথাটা শুনতে একটু আজব লাগছে। কিন্তু বাস্তবিকই টুথপেস্ট আমাদের মৃত্যু পরোয়ান লিখে চলেছে। একাধিক গবেষণায় একথা প্রমাণিতও হয়ে গেছে যে বেশিরভাগ টুথপেস্টে এমন কিছু উপাদান থাকে, যা শরীরে প্রবেশ করা মাত্র নানা নেতিবাচক রদবদল ঘটতে শুরু করে। ফলে একাধিক মারণ রোগ ছেঁকে ধরে আমাদের। আর বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই আমরা জানতেও পারি না যে মৃত্য়ু ধীরে ধীরে এগিয়ে আসছে আমাদের দিকে। যখন বুঝতে পারি, তখন এতটাই দেরি হয়ে যায় যে কিছুই করার থাকে না। আচ্ছা আমরা তো ব্রাশ করা হয়ে গেলেই পেস্টটা মুখ থেকে ফেলে দি। তাহলে কীভাবে এটি আমাদের অসুস্থ করে তোলে? একথা ঠিক যে ব্রাশ করার পর পরই আমরা টুথপেস্ট আর মুখে রাখি না। কিন্তু ওইটুকু সময়ের মধ্যেই ক্ষতিকর সব কেমিকাল আমাদের মুখ হয়ে দ্রুত গতিতে পৌঁছে যায় শরীরে অন্দর মহলে। আর একবার এইসব উপাদানগুলি রক্তে মিশে গেলেই ধীরে ধীরে এক একটা অঙ্গের ক্ষতি শুরু করে। আর যত এই ক্ষয়ক্ষতি বাড়তে থাকে, তত আমাদের শরীরে ভাঙন ধরে। তাহলে আর অপক্ষা কেন চলুন জেনে নেওয়া যাক বাজার চলতি বেশিরভাগ টুথপেস্টের থেকে কী কী রোগ হওয়ার আশঙ্কা থাকে আমাদের।

১. অর্থ্রাইটিস রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা থাকে: টুথপেস্টে উপস্থিত ফ্লরাইড রক্তে মেশার পর দেহের অন্দরে এমন কিছু রদবদল ঘটাতে শুরু করে যে জয়েন্টে প্রদাহ বৃদ্ধি পেতে থাকে। ফলে স্বাভাবিকভাবেই আর্থ্রাইটিস এবং স্কেলেটাল ফ্লরোসিসের মতো রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা বৃদ্ধি পায়। প্রসঙ্গত, ২০০২ সালে হওয়া একটি গবেষণায় একথা প্রমাণিত হয়ে গেছে যে আমেরিকায় আর্থ্রাইটিস রোগীর সংখ্যা বৃদ্ধি পাওয়ার পিছনে অনেকাংশেই দায়ি ফ্লরাইড। তাই এবার থেকে টুথপেস্ট কেনার আগে জেনে নিতে ভুলবেন না যে তাতে এই বিষাক্ত উপাদানটি আছে কিনা।

২. হতে পারে ডায়াবেটিসও: একাধিক গবেষণায় দেখা গেছে টুথপেস্টে উপস্থিত এসপার্টেম নামে একটি উপাদান শরীরে ক্রমাগত প্রবেশ করতে থাকলে ওজন বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কাও বহুগুণে বৃদ্ধি পায়। শুধু তাই নয়, এসপার্টেনের কারণে ব্রেন টিউমার হওয়ারও সম্ভাবনা থাকে। তাই এখনই সাবধান হন। যে কোনও টুথপেস্ট কেনার আগে দেখে নিন এইসব উপাদানগুলি আছে কিনা। প্রয়োজনে হার্বাল টুথপেস্ট ব্যবহার করুন।

৩. মুখে আলসার এবং হরমোনাল ইমব্যালেন্স: অনেক টুথপেস্টেই সোডিয়াম লরিয়াল সালফেট নামে একটি উপাদান থাকে। সাধারণ এই কেমিক্যালটি সাবান এবং শ্য়াম্পুতে ফেনা সৃষ্টি করার জন্য ব্যবহার করা হয়ে থাকে। প্রসঙ্গত, এই রাসায়নিকটির কারণে মুখে আলসার হওয়ার অশঙ্কা যেমন থাকে, তেমনি হরমোনল ইমব্যালেন্স হওয়ার সম্ভাবনাও থেকে যায়।

৪. মস্তিষ্ক, কিডনি এবং হার্টের কর্মক্ষমতা কমছে: টুথপেস্টে উপস্থিত পলিইথাইলিন গ্রাইকোলস নামে একটি উপাদান একসঙ্গে শরীরের তিনটি গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ, হার্ট, কিডনি এবং মস্তিষ্কের ক্ষতি করছে। আর এমমনটা দীর্ঘদিন ধরে হতে থাকলে কী হতে পারে তা নিশ্চয় আর বলে দিতে হবে না। প্রসঙ্গত, পলিইথাইলিন গ্রাইকোলস হল এক ধরনের প্লাস্টিক জাতীয় উপাদান, যা শরীরে পক্ষে মারাত্মক ক্ষতিকর।

৫. হাড়ের স্বাস্থ্য়ের অবনতি ঘটে: একাধিক গবেষণাতে একথা প্রমাণিত হয়ে গেছে যে শরীরে ফ্লরাইডের মাত্রা বৃদ্ধি পেতে শুরু করলে ধীরে ধীরে হাড় ভঙ্গুর হতে শুরু করে। ফলে নানাবিধ রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা বৃদ্ধি পায়। তাই সাবধান!

৬.লিভার এবং কিডনি ক্যান্সার: কোনও গুজব নয়, বাস্তবিকই টথপেস্টের কারণে লিভার এবং কিডনি খারাপ হয়ে যেতে পারে। হতে পারে কিডনি ক্যান্সারও। আসলে বেশ কিছু টুথপেস্টে ডায়েথেনোলেমিন নামে এক ধরনের রাসায়নিক থাকে, যা টুথপেস্টে ফেনা তৈরি করার জন্য ব্যবহার করা হয়। এই কেমিক্যালটির কারণে লিভার এবংকিডনির মারাত্মক ক্ষতি হয়। শুধু তাই নয় এই উপাদানটির শরীরে একাধিক হরমোনের ক্ষরণ ঠিক মতো হতে দেয় না। ফলে দেখা দেয় আরও হাজারো রোগ।

৭. বাচ্চাদের বুদ্ধি এবং স্মৃতিশক্তি কমে যেতে পারে: ফ্লরাইড নামে একটি উপাদান বিপুল পরিমাণে থাকে বাজার চলতি অনেক টুথপেস্টে, যা রক্তে মেশা মাত্র মস্তিষ্কের যে অংশটি আমাদের বুদ্ধিকে নিয়ন্ত্রণ করে থাকে, সেই নির্দিষ্ট জায়গায় আঘাত করতে শুরু করে। ফলে ধীরে ধীরে মস্তিষ্কের সেই অংশের কর্মক্ষমতা কমে গিয়ে বুন্ধির ধারও ভোঁতা হতে শুরু করে। বিশেষত বাচ্চাদের ক্ষেত্রে এমনটা হলেও প্রাপ্তবয়স্করা যে এই ক্ষতিকর উপাদানটির প্রভাব থেকে বেঁচে থাকতে পারে, তাও বলা যায় না। প্রসঙ্গত, গর্ভবতী মহিলার শরীরে যদি ফ্লরাইডের মাত্রা খুব বেড়ে যায়, তাহলে থাইরয়েড প্রবেলম, হাড়ের ক্ষয়, পেটের রোগ, এমনকী নানাবিধ ক্যান্সার রোগ হওয়ার আশঙ্কাও বেড়ে যায়।

৮. থাইরয়েড: মুখ গহ্বরে উপস্থিত জীবাণুদের মারার জন্য় প্রায় সব টুথপেস্টেই ট্রিক্লোসেন নামে এক ধরনের কেমিক্যাল থাকে, যা এক সময় পেস্টিসাইড হিসেবে ব্যবহার করা হত। তাহলে বুঝতেই পারছেন যে রাসায়নিক দিয়ে পোকা-মাকড়দের মারা হত, এখন সেই জিনিসকে কাজে লাগিয়ে দাঁতের জীবাণু মারা হচ্ছে। ফলে দীর্ঘ সময় ধরে এমন রাসায়নিক শরীরে প্রবেশ করার ফলে দেখে দিচ্ছে সব জটিল রোগ। প্রসঙ্গত, একাধিক গবেষণায় দেখে গেছে এই ক্ষতিকর উপাদানটির কারণে সারা বিশ্বেই থাইরয়েড রোগের প্রকোপ খুব বৃদ্ধি পাচ্ছে।

৯. গ্যাস-অম্বল এবং পেটের রোগ: একেবারে ঠিক শুনেছেন, টুথপেস্টের কারণে গ্যাস-অম্বল হওয়ারও আশঙ্কাও থাকে। আসলে এতে উপস্থিত সরবিটল নামে একটি উপাদান সহজে হজম হয় না। ফলে শরীরে এই উপাদানটি প্রবেশ করা মাত্র ডায়ারিয়া, বদ-হজম, গ্যাস-অম্বল এবং পেটে যন্ত্রণার মতো সমস্যা দেখা দিতে পারে।

Random Post