পিরিয়ডের রং দেখে জেনে যাওয়া সম্ভব কী কী রোগ বাসা বেঁধেছে আপনার শরীরে!

কজন মহিলাই বা তার পিরিয়ডের রঙের দিকে খেয়াল রাখেন বলুন! হাতে গোনা কয়েকজন হবে বৈকি। কী তাই তো? এই কারণেই তো এই প্রবন্ধটি লেখার সিদ্ধান্ত নেওয়া। পিরিয়ডের রং দেখার প্রয়োজন কী কারণে? একাধিক গবেষণায় দেখা গেছে মাসের এই বিশেষ সময়ে যে রক্তক্ষরণ হয়, তার রং দেখে জেনে যাওয়া সম্ভব শরীরের অনেক আজানা বিষয় সম্পর্কে। এমনকী কী কী জটিল রোগ শরীরকে আক্রমণ করেছে সে সম্পর্কেও ধারণা করা সম্ভব হয় এই পদ্ধতি অনসরণ করে। তাই তো প্রতিটি মহিলারই পিরিয়ডের সময়কার রক্তের রং দেখে সে সম্পর্কে চিকিৎসকের সঙ্গে পরামর্শ করা উচিত। প্রসঙ্গত, বয়:সন্ধি পেরতে না পেরতেই মেয়েদের শরীরে নানা পরিবর্তন আসতে শুরু করে। যার অন্য়তম হল মেনস্ট্রয়েশন প্রসেস। সাধারণত ১২ বছর বয়সের পর থেকেই শুরু হয়ে যায় শরীরের এই আজব খেল, চলে ৪৫-৫৫ বছর পর্যন্ত। প্রসঙ্গত, পিরিয়োড থেমে যাওয়াকে বলা হয় মেনোপজ। পিরিয়ডের সময়কার রক্তের রং দেখে কী করে বুঝবেন শরীরে অন্দরের হাল-হলিকত সম্পর্কে, চলুন জেনে নেওয়া যাক সে বিষয়ে...

১. গাড় লাল ক্লট: পিরিয়ডের রং এমন হলে বুঝতে হবে আপনার শরীরে প্রজেস্টেরণ হরোমনের ক্ষরণ বেশি মারাত্মক কমে গেছে। কারণ এমন পরিস্থিতিতেই সাধারণত ব্লাড ক্লট হয়ে থাকে। প্রসঙ্গত, কল্ট যদি ছোট ছোট আকারের হয়, তাহলে চিন্তার কোনও কারণ নেই। কিন্তু যদি বড় আকারের হয়, তাহলে বুঝতে হবে শরীরের অন্দরে মারাত্মক হরমোনাল ইমব্যালেন্স ঘটেছে। এমন ক্ষেত্রে চিকিৎসকের পরামর্শ নিতেই হবে।

২. ক্র্যানবেরির মতো লাল: পিরিয়ডের সময়কার রক্তের রং যদি উজ্জ্বল লাল রঙের হয় তাহলে বুঝবেন আপনার শরীর একেবারে চাঙ্গা আছে। অর্থাৎ রক্তের রং এমনটাই হওয়া উচিত।

৩. জ্য়ামের মতো যদি রং হয়: আপনি যদি লক্ষ করেন আপনার পিরিয়ডের সময় রক্তর রং অনেকটা জ্য়ামের মতো চকটকে লাল, তাহলে বুঝবেন আপনার শরীরে প্রজেস্টেরন হরমোনের মাত্রা কম, কিন্তু ইস্ট্রোজেনের মাত্রা স্বাভাবিক রয়েছে। অর্থাৎ আপনি হরমোনাল ইমবেলেন্স ভুগছেন। প্রসঙ্গত, রক্তের রং এমন হলে অনেক সময় ইউটেরাইন ফাইব্রয়েডস হওয়ার আশঙ্কাও বেড়ে যায়।

৪. হালকা লাল: আপনার পিরিয়ডের সময়কার রক্তের রং যদি খুব হালকা হয়, তাহলে বুঝবেন আপনি অপুষ্টি অথবা অ্যানিমিয়ায় ভুগছেন। অনেক ক্ষেত্রে অন্যান্য নানা রোগের কারণেও পিরিয়ডের রক্তের রং এমন হালকা হয়ে যায়।

৫. ধূসর লাল: কোনও ধরনের সেক্সসুয়াল ট্রান্সমিটেড ডিজিজে আক্রান্ত হলে সাধারণত রক্তের রং এমন হয়ে যায়। সেই সঙ্গে রক্ত থেকে বাজে গন্ধও বেরতে থাকে।

৬. জলের মতো হলে: বেশ কিছু গবেষমায় দেখা গেছে পিরিয়োডে সময় রক্তের রং যদি একেবারে হালকা জলের মতো হয়, তাহলে বুঝতে হবে আপনার শরীরে পুষ্টির ঘাটতি দেখা দিয়েছে। অনেক সময় অ্যানিমিয়ায় আক্রান্ত হলেও পিরিয়ডের রং এমন হয়ে থাকে। তাই পর পর ২-৩ বার যদি পিরিয়ডের সময় রক্তের রং এমন হয়, তাহলে চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে ভুলবেন না যেন!

৭. গোলাপী যদি হয়: রক্তের রং যদি হলকা গোলাপী বা ফ্য়াকাশে গোছের হয়, তাহলে বুঝবেন আপনার শরীরে ইস্ট্রোজেন হরমোনের মাত্রা খুব কম। এমনটা হলে কিন্তু সাবধান! কারণ ইস্ট্রোজেন হরমোনের মাত্রা কমে গেলে অস্টিওপোরোসিসে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা বেড়ে যায়।

৮. কালো খয়েরি রং: এমনটা হওয়ার অর্থ হল আপনার ইউটেরাইনের লাইনিং সেই মাসে মোটা হয়ে গেছে। এক্ষেত্রে চিন্তার কোনও কারণ নেই।

Random Post