এক মুঠোতেই কেল্লাফতে!

সুস্থভাবে বাঁচতে চান তো? তাহলে প্রতিদিন এক মুঠো করে বাদাম খাওয়া শুরু করুন। দেখবেন হার্ট এতটাই চাঙ্গা হয়ে উঠবে যে স্বাভাবিকভাবেই আয়ু বাড়বে চোখে পরার মতো। সেই সঙ্গে মিলবে আরও অনেক উপকারও। প্রায় সব ধরনের বাদামেই প্রচুর মাত্রায় পুষ্টিকর উপাদান থাকে, সেই সঙ্গে উপস্থিত থাকে ভিটামিন বি, ই,আয়রন, জিঙ্ক, পটাশিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট প্রপাটিজ, যা নানাভাবে একাধিক রোগকে তো দূরে রাখেই, সেই সঙ্গে ক্যান্সারের মতো মারণ রোগকে দূরে রাখতেও বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে। এবার বুঝেছেন নিশ্চয়, শরীরকে চাঙ্গা রাখতে কেন প্রতিদিন এক মুঠো করে বাদাম খাওয়ার পরামর্শ দিচ্ছেন চিকিৎসকেরা। তবে বাদামের উপকারিতা এখানেই শেষ হয়ে যায় না। বেশ কিছু গবেষণায় দেখা গেছে এই প্রকৃতিক উপাদানটিতে উপস্থিত উপকারি উপাদানেরা আরও নানাভাবে শরীরের কাজে লেগে থাকে। যেমন ধরুন...

১. এনার্জির ঘাটিত দূর করে: বেশ কিছু স্টাডিতে দেখা গেছে নিয়মিত বাদাম খাওয়ার অভ্যাস করলে শরীর ভিতর থেকে এতটাই কর্মক্ষম হয়ে ওঠে যে এনার্জির ঘাটতি দূর হতে সময় লাগে না। তাই তো সপ্তাহের শেষে যখন দেখবেন শরীর আর চলছে না, তখন অল্প করে বাদাম খেয়ে নিতে ভুলবেন না যেন! এমনটা করলে দেখবেন ক্লান্তি দূর হতে সময় লাগবে না।

২. খারাপ কোলেস্টেরলের মাত্রা কমায়: বাদামে উপস্থিত মনোস্যাচুরেটেড ফ্যাটি অ্যাসিড, রক্তে উপস্থিত খারাপ কোলেস্টেরলের মাত্রা কমাতে শুরু করে, অন্যদিকে বাড়াতে শুরু করে উপকারি কোলেস্টেরলের পরিমাণ। ফলে স্বাভাবিকভাবেই হার্টের স্বাস্থ্যের উন্নতি ঘটতে শুরু করে। আর এমনটা যত হতে থাকে, তত হার্ট অ্যাটাক এবং অন্যান্য কার্ডিওভাসকুলার ডিজিজে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা একেবারে কমে যায়। প্রসঙ্গত, বেশ কিছু গবেষণায় দেখা গেছে স্ট্রোকের মতো মারণ ব্যাধিকে দূরে রাখতেও বাদামের কোনও বিকল্প হয় না বললেই চলে।

৩.শরীরে ওমেগা থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিডের মাত্রা বৃদ্ধি পায়: নিয়মিত বাদাম খাওয়া শুরু করলে দেহের অন্দরে ওমেগা থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিড এবং অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি প্রপাটিজের মাত্রা বৃদ্ধি পেতে শুরু করে। ফলে একদিকে যেমন ব্রেন পাওয়ার বৃদ্ধি পায়, তেমনি রক্তচাপ স্বাভাবিক মাত্রায় নেমে আসে। সেই সঙ্গে ব্রেস্ট, কলোন এবং প্রস্টেট ক্যান্সারের মতো রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কাও কমে। প্রসঙ্গত, ওমেগা থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিড দৃষ্টিশক্তির উন্নতিতে এবং স্কিনের সৌন্দর্য বৃদ্ধিতেও সাহায্য করে।

৪. আর্থ্রাইটিসের কষ্ট কমায়: প্রতি বছর ঠান্ডার সময় জয়েন্টে পেনে একেবারে কাবু হয়ে যান নাকি? তাহলে তো বন্ধু বছরের এই সময়টায় একটু বেশি করে বাদাম খেতে হবে। কারণ এর মধ্যে উপস্থিত উপকারি খনিজেরা হাড়কে শক্তপোক্ত করার পাশাপাশি জয়েন্টের সচলতা এত মাত্রায় বৃদ্ধি করে দেয় যে আর্থ্রাইটিসের মতো রোগ ঘারে চেপে বসার সুযোগই পায় না।

৫. অ্যালঝাইমার রোগকে দূরে রাখে: বাদামে উপস্থিত ওমেগা থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিড ব্রেন পাওয়ার এতটা বাড়িয়ে দেয় যে স্মৃতিশক্তি যেমন বৃদ্ধি পেতে শুরু করে, তেমনি কগনিটিভ পাওয়ারও বাড়তে থাকে। ফলে ডিমেনশিয়া, অ্যালঝাইমারস এবং অন্যান্য স্নায়ুরোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা একেবারে কমে যায়। প্রসঙ্গত, বুদ্ধির দার বাড়াতে যদি চান তাহলেও বাদাম খাওয়া শুরু করতে পারেন। কারণ এক্ষেত্রেও এই প্রকৃতিক উপাদানটি সাহায্য করে থাকে।

৬. মানসিক অবসাদকে নিয়ন্ত্রণে রাখে: অতিরিক্ত স্ট্রেসের কারণে কি মন বেজায় খারাপ? তাহলে বন্ধু ঝটপট বাদাম খাওয়া শুরু করুন। দেখবেন উপকার মিলত সময় লগবে না। কারণ মস্তিষ্কের অন্দরে ফিল গুড হরমোনের ক্ষরণ বাড়িয়ে দিয়ে স্ট্রেস এবং মানসিক অবসাদের মতো রোগকে দূরে রাখতে বাদামের কোনও বিকল্প হয় না বললেই চলে।

৭. অ্যানিমিয়ার প্রকোপ কমায়: আমাদের দেশে যেভাবে রক্তাল্পতার সমস্যা বাড়তে শুরু করেছে, তাতে বাদাম খাওয়ার প্রয়োজন বেড়েছে অনেক মাত্রায়। কারণ বাদামে উপস্থিত আয়রন শরীরে প্রবেশ করার পর লোহিত রক্ত কণিকার উৎপাদন বাড়িয়ে দেয়। ফলে অ্যানিমিয়ার প্রকোপ কমতে সময় লাগে না। দৈনিক কত পরিমাণে বাদাম খাওয়া উচিত? দৈনিক কত পরিমাণে বাদাম খাওয়া উচিত? একাধিক কেস স্টাডি করার পর চিকিৎসকদের মনে হয়েছে দৈনিক ৩০ গ্রাম করে বাদাম খেলে দারুন উপকার পাওয়া যায়। কিন্তু প্রশ্ন হল প্রতিবার এমন মেপে বাদাম খাওয়া তো সম্ভব নয়। তাই নিয়মিত এক মুঠো করে খাওয়ার চেষ্টা করবেন।

Random Post