প্রতিদিন জাম, বাঁধাকোপি, বিট এবং পালং শাক খেতে কেন বলছেন চিকিৎসকেরা!

একাধিক গবেষণায় দেখা গেছে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ খাবার, যেমন জাম, ডার্ক চকোলেট, কিডনি বিনস, লবঙ্গ, দারুচিনি, লেবু ,পালং শাক, তুলসি পাতা এবং আদা নিয়মিত খেলে শরীরে ইনসুলিনের কর্মক্ষমতা এতটা বেড়ে যায় যে ডায়াবেটিস রোগ ধারে কাছেও ঘেঁষতে পারে না। সেই সঙ্গে আরও একাধিক রোগ দূরে থাকতে বাধ্য হয়। ফলে আয়ু বাড়ে চোখে পরার মতো। এই কারণেই তো আজকের দূষিত পরিবেশে শরীরকে সুস্থ রাখতে চিকিৎসকেরা প্রতিদিন অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ খাবার খাওয়া পরামর্শ দেওয়া হয়ে থাকে। এখন প্রশ্ন হল অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট কী কী উপকারে লাগে শরীরের?

১. রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতার উন্নতি ঘটে: শরীরকে সুস্থ যদি চান, তাহলে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট সমৃদ্ধি ফল এবং সবজি খেতে ভুলবেন না যেন! কারণে একাধিক গবেষণায় দেখা গেছে এই বিশেষ উপাদানটি শরীরে প্রবেশ করার পর এমন খেল দেখায় যে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতার উন্নতি ঘটতে সময় লাগে না। ফলে ছোট-বড় কোনও রোগই ধারে কাছে ঘেঁষতে পারে না।

২. আর্থ্রাইটিসের মতো রোগের প্রকোপ কমে: বেশ কিছু স্টাডিতে দেখা গেছে নিয়মিত অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ খাবার খাওয়া শুরু করলে দেহের অন্দরে প্রদাহের মাত্রা কমতে শুরু করে। ফলে স্বাভাবিকভাবেই রিউমাটয়েড আর্থ্রাইটিসের মতো রোগের প্রকোপ কমতে সময় লাগে না।

৩. ক্যান্সারের মতো মারণ রোগ দূরে থাকে: বেশ কিছু গবেষণায় একথা ইতিমধ্যেই প্রমাণিত হয়ে গেছে যে শরীরে অ্যান্টঅক্সিডেন্টের ঘাটতি মিটতে থাকলে ক্যান্সার রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা কমে। কারণ অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট শরীরে উপস্থিত টক্সিক উপাদানদের শরীর থেকে বার করে দিয়ে ক্যান্সার সেলের জন্ম নেওয়ার আশঙ্কা কমায়। সেই সঙ্গে ম্যালিগনেন্ট টিউমারের সম্ভাবনাও কমায়।

৪.ত্বকের সৌন্দর্য বাড়ে: খাতায় কলমে শরীরের বয়সে বাড়ালেও আপনি কি চান ত্বকের বয়স না বারুক? তাহলে যে বন্ধু প্রতিদিনের ডায়েটে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ খাবার রাখতেই হবে। কারণ অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, শরীরের কোণায় কোণায় জমে থাকা টক্সিক উপাদানদের বের করে দিতে বিশেষ ভূমিকা নেয়। ফলে স্বাভাবিকভাবেই ত্বকের সৌন্দর্য বাড়তে শুরু করে। প্রসঙ্গত, এইসব টক্সিক উপাদানদের মাত্রা যদি শরীরে বাড়তে শুরু করে, তাহলে ত্বকের উপর খারাপ প্রভাব তো পরেই, সেই সঙ্গে ক্যান্সার রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কাও বৃদ্ধি পায়।

৫. হার্টের স্বাস্থ্যের উন্নতি ঘটে: শরীরে উপস্থিত টক্সিক উপাদানেরা যাতে কোনও ভাবে হার্টে রক্ত সরবরাহকারি শিরা-ধমনির ক্ষতি করতে না পারে, সেদিকে খেয়াল রাখে। সেই সঙ্গে হার্টের কর্মক্ষমতা বাড়ানোর মধ্যে দিয়ে নানাবিধ হার্ট ডিজিজকে দূরে রাখতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে। প্রসঙ্গত, আমেরিকান জার্নাল অব ক্লিনিকাল নিউট্রিশানের রিপোর্ট অনুসারে যাদের শরীরে অ্যান্টিঅক্সিডেন্টের মাত্রা বেশি থাকে, তাদের স্ট্রোকে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা প্রায় ৫০ শতাংশ কমে যায়।

৬. ব্রেন পাওয়ার বৃদ্ধি পায়: শরীরে অক্সিডেটিভ স্ট্রেসের মাত্রা বৃদ্ধি পেলে ধীরে ধীরে নার্ভের ক্ষমতা কমে যেতে শুরু করে। সেই সঙ্গে স্মৃতিশক্তিও কমতে শুরু করে। তাই তো অক্সিডেটিভ স্ট্রেসের মাত্রা যাতে কোনও ভাবে বৃদ্ধি না পায়, সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। আর এই কাজটি করবেন কিভাবে? এক্ষেত্রে প্রতিদিন অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ খাবার খেতে হবে। এমনটা করলেই দেখবেন একদিকে যেমন অক্সিডেটিভ স্ট্রেসের মাত্রা কমবে, তেমনি ডিমেনশিয়া এবং অ্যালঝাইমারসের মতো রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কাও আর থাকবে না।

৭. দৃষ্টিশক্তির উন্নতি ঘটে: বয়সের সঙ্গে সঙ্গে যাতে ম্যাকুলার ডিজেনারেশন না হয়, সেদিকে খেয়াল রাখে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট। সেই সঙ্গে রেটিনার কর্মক্ষমতা বাড়ানোর মধ্যে দৃষ্টিশক্তির সার্বিক উন্নতিতে বিশেষ ভূমিকা নেয়। তাই তো যারা দিনের বেশিটা সময় কম্পিউটারের সামনে কাটান, তাদের নিয়মিত অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ খাবার খাওয়ার পরামর্শ দেন বিশেষজ্ঞরা।

Random Post