চিকিৎসকেরা প্রতিদিন ব্রাহ্মী শাক খেতে কেন বলছেন জানেন?

একাধিক প্রচীন পুঁথি ঘেঁটে জানতে পারা যায় আয়ুর্বেদ চিকিৎসা শাস্ত্রের জন্ম লগ্ন থেকেই এই শাকটির ব্যবহার হয়ে আসছে। কারণ ব্রাহ্মী শাক ব্রেন পাওয়ার বাড়ানোর পাশাপাশি আরও নানাভাবে শারীরের উপকারে লেগে থাকে। যেমন...

১. গ্যাস্ট্রিক আলসারের মতো রোগ ধারে কাছেও ঘেঁষতে পারে না: ব্রাহ্মী শাকে উপস্থিত শক্তিশালী অ্যান্টি-ব্যাকটেরিয়াল প্রপাটিজ দেহে প্রবেশ করে আলসার সৃষ্টি করি এইচ.পাইলোরি ব্যাকটেরিয়াকে মেরে ফেলে। ফলে এমন ধরনের পেটের রোগ মাথা চাড়া দিয়ে ওঠার আশঙ্কা একেবারে কমে যায়।

২.এপিলেপসির মতো রোগকে দূরে রাখে: বেশ কিছু গবেষণায় দেখা গেছে ব্রাহ্মী শাখে উপস্থিত একাধিক উপকারি উপাদান শরীরে প্রবেশ করা মাত্র বেশ কিছু নিউরোট্রান্সমিটারের কর্মক্ষমতা বাড়তে শুরু করে। ফলে এপিলেপসির মতো রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা একেবারে কমে যায়।

৩. স্ট্রেস এবং অ্যাংজাইটির মাত্রা কমায়: একাধিক গবেষণায় দেখা গেছে নিয়মিত ব্রাহ্মী শাক খেলে মস্তিষ্কের অন্দরে স্ট্রেস এবং অ্যাংজাইটির জন্ম দেওয়া কর্টিজল হরমোনের ক্ষরণ কমতে শুরু করে। ফলে স্বাভাবিকভাবেই মানসিক চাপ যেমন কমে, তেমনি মনের হারিয়ে যাওয়া অনন্দও ফিরে আসে। প্রসঙ্গত, আজকের দিনে ছাত্র-ছাত্রী হোক কি চাকরিজীবী, সকলেই নানা কারণে বেজায় মানসিক চাপের মধ্যে থাকেন। ফলে ডিপ্রেশনের মতো মানসিক রোগের খপ্পরে পরে যাওয়ার আশঙ্কা থাকে। এমন পরিস্থিতিতে ব্রাহ্মী শাক খেলে কতটা উপকার মিলতে পারে, তা নিশ্চয় আর বলে দিতে হবে না।

৪. ক্যান্সার রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা কমে: এই শাকটিতে রয়েছে প্রচুর মাত্রায় অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট। এই উপাদানটি শরীর থেকে নানাবিধ ক্ষতিকর উপাদানদের বার করে দিয়ে একদিকে যেমন ক্যান্সার সেলের জন্ম আটকায়, তেমনি সার্বিকভাবে শরীরের কর্মক্ষমতা বাড়াতেও বিশেষ ভূমিকা নেয়। সেই কারণেই তো সুস্থ জীবন পাওয়ার স্বপ্ন পূরণ করতে ব্রাহ্মী শাকের সঙ্গে বন্ধুত্ব করাটা জরুরি।

৫. অ্যালঝাইমার রোগকে দূর রাখে: ব্রাহ্মী শাকে উপস্থিত ব্যাকোসাইড নামক এক ধরনের বায়ো-কেমিকাল ব্রেন টিস্যুর ক্ষত সারিয়ে তাদের ক্ষমতা বৃদ্ধিতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে। ফলে স্বাভাবিকভাবেই বয়সের সঙ্গে তাল মিলিয়ে ব্রেন পাওয়ার কমে যাওয়ার আশঙ্কা যেমন হ্রাস পায়, তেমনি কগনিটিভ ফাংশন কমে যাওয়ার সম্ভাবনাও কমে।

৬. রক্তচাপ স্বাভাবিক রাখে: অতিরিক্ত টেনশনের কারণে কি ব্লাড প্রেসার ওঠা-নামা করছে? তাহলে আজ থেকেই ব্রাহ্মী শাক খাওয়া শুরু করুন। কারণ এই শকটি রক্তচাপকে স্বাভাবিক রাখতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে। সেই সঙ্গে ব্লাড প্রেসার হঠাৎ বেড়ে যাওয়ার কারণে যাতে কোনও ধরনের ক্ষতি না হয়, সেদিকেও খেয়াল রাখে।

৭. বুদ্ধি এবং স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধি পায়: বেশ কিছু গবেষণায় দেখা গেছে ব্রাহ্মী শাকে উপস্থিত বেশ কিছু কার্যকরি উপাদান শরীরে প্রবেশ করা মাত্র ব্রেনের হিপোকম্পাস অংশটির ক্ষমতা এতটা বেড়ে যায় যে বুদ্ধি এবং স্মৃতিশক্তি চোখে পারার মতো বাড়তে শুরু করে। প্রসঙ্গত, মনোযোগ বাড়াতেও এই শাকটি বিশেষ ভূমিকা নেয়। কারণ ব্রেনের হিপোকম্পাস অংশটির ক্ষমতা বাড়াছে না কমছে, তার উপর মনোযোগের বাড়া-কমা অনেকাংশেই বৃদ্ধি পায়। তাই তো আলেকজান্ডার দি গ্রেটের মতো যদি বুদ্ধিমান হয়ে উঠতে চান, তাহলে নিয়মিত ব্রাহ্মী শাক খাওয়া মাস্ট!

৮. রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতার উন্নতি ঘটে: নিয়মিত এই শাকটি খাওয়া শুরু করলে শরীরে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এবং ভিটামিন সি-এর মাত্রা বৃদ্ধি পেতে শুরু করে, যা রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থাকে জোরদার করে তুলতে সাহায্য করে। আর একবার ইমিউনিটি বেড়ে গেলে কোনও ধরনের সংক্রমণ তো ধারে কাছে ঘেঁষতে পারেই না, সেই সঙ্গে আরও নানাসব রোগ দূরে পালাতেও বাধ্য হয়।

Random Post