সাবধান: একটা সিগারেট থেকেই কিন্তু শুরু হয় নেশার খপ্পরে পরা!

সম্প্রতি প্রাকশিত একটি গবেষণায় দেখা গেছে সিগারেটের স্বাদ কেমন তা জানতে গিয়ে কয়েকটা টান দেওয়ার পর, সেই যে শুরু হয় ধূমপান, তা অনেকের পক্ষেই পরবর্তি সময় ছাড়া সম্ভব হয় না। তাই ধূপপান যারা করেন না, তারা ভুলেও কোনও দিন সিগারেটের ধারে কাছেও যাবেন না কিন্তু! প্রায় ২১৫,০০০ জনের উপর সমীক্ষা চলিয়ে গবেষকরা জানতে পেরেছেন সিংহভাগ ক্ষেত্রেই প্রথমে একটা টান, তারপর তা থেকে স্মোকিং-এর প্রতি ভালবাসা জন্ম নেওয়ার ঘটনা ঘটে থাকে। তাই তো চিকিৎসকেরা সিগারেটে একটা টানও দিতে মানা করছেন! আসলে একবার শরীরে নিকোটিন প্রবেশ করতে শুরু করলে মস্তিষ্কের অন্দরে এমন কিছু পরিবর্তন হতে শুরু করে যে বারে বারে ধূমপান করার ইচ্ছা জাগে। আর এমন করতে করতে এক টান থেকে কখন যে দিনে ১০ টা সিগারেট এসে দাঁড়ায় এই কুঅভ্যাস, তা অনেকেই বুঝে উঠতে পারেন না। প্রসঙ্গত, ইউ কে, ইউ এস এ, অস্ট্রেলিয়া এবং নিউজিল্যান্ড থেকে সংগ্রহ করা ডেটা বিশ্লেষণ করে গবেষকরা আরও জানতে পরেছেন যে একবার সিগারেট স্মোকিং শুরু করে দিলে প্রায় ৭০ শাতংশ ক্ষেত্রেই সেই অভ্যাস ত্যাগ করা সম্ভব হয় না। ফলে ধীরে ধীরে শরীর মৃত্যু মুখে ধাবিত হয়। সরকারি এবং বেসরকারি পরিসংখ্যানের দিকে নজর ফেরালে জানতে পারবেন গত কয়েক দশকে আমাদের দেশে ধূমপান শুরু করার গড় বয়স ১৮ বছরে এসে দাঁড়িয়েছে। যে কারণে মুখগহ্বরের ক্যান্সারে সহ আরও নানাবিধ জটিল রোগের প্রকোপ চোখে পরার মতো বৃদ্ধি পয়েছে। ফলে কমতে শুরু করেছে ভারতীয়দের গড় আয়ু। এমন পরিস্থিতিতে ধূমপান ছেড়ে দেওয়া ছাড়া যে আর কোনও রাস্তা নেই, সে বিষয়ে নিশ্চয় বুঝতে অসুবিধা হচ্ছে না। আর আশার কথা হল সিগারেট স্মোকিং ছেড়ে দিলে ধীরে ধীরে ফুসফুসের উপর হওয়া নিকোটিনের কু-প্রভাবও কমতে শুরু করে। ফলে লাং-এর কর্মক্ষমতা বৃদ্ধি পেতে শুরু করে। তাই সুস্থভাবে যদি বাঁচতে হয়, তাহলে যত শীঘ্র সম্ভব ধূমপান ছেড়ে দেওয়ার চেষ্টা করুন, দেখবেন উপকার পাবেন। এখন প্রশ্ন হল, ধূমপান ছাড়া মোটেও সহজ কাজ নয়। এমন পরিস্থিতিতে কী করণীয়? কোনও চিন্তা নেই বন্ধু একবার এই প্রবন্ধে চোখ রাখুন, তাহলেই দেখবেন সব প্রশ্নের উত্তর পয়ে যাবেন। কারণ এই লেখায় এমন কিছু ঘরোয়া উপায় সম্পর্কে আলোচনা করা হল, যা ধূপানের নেশা ছাড়াতে দারুন কাজে আসে। প্রসঙ্গত, এক্ষেত্রে যে যে খাবরগুলি বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে, সেগুলি হল...

১. ওটস: একাধিক গবেষণায় দখা গেছে নিয়মিত ওটস খাওয়া শুরু করলে শরীর থেকে ক্ষতিকর টক্সিক উপাদানেরা বেরিয়ে যেতে শুরু করে। সেই সঙ্গে নিকোটিনের প্রভাবও কমতে থাকে, ফলে সিগারেট খাওয়ার ইচ্ছা ধীরে ধীরে হলেও কমে। সেই সঙ্গে সিগারেট ছাড়ার কারণে যে যে সমস্যা মাথা চাড়া দিয়ে ওঠে, তা কমাতেও ওটস সাহায্য করে থাকে। এক্ষেত্রে ২ চামচ ওটস ২ কাপ জলে মিশিয়ে সারা রাত রেখে দিতে হবে। পরদিন একটু গরম করে প্রতিটি মিলের পর অল্প করে খেতে হবে। এমনটা কয়েক সপ্তাহ করলেই দেখবেন উপকার মিলতে শুরু করেছে।

২. জল: শুনতে আজব লাগলেও ইতিমধ্যেই একথা প্রমাণিত হয়ে গেছে যে ধূমপান ছাড়াতে জল বাস্তবিকই সাহায্য করে থাকে। আসলে বেশি মাত্রায় জল খেলে শরীর থেকে নিকোটিনের মতো টক্সিক উপাদান বেরিয়ে যেতে শুরু করে। ফলে সিগারেট খাওয়ার ইচ্ছা কমে। সেই সঙ্গে শরীর বিষমুক্ত হওয়ার কারণে নানাবিধ রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কাও হ্রাস পায়। প্রসঙ্গত, সিগারেট ছাড়ার সিদ্ধান্ত নিয়ে নিলে প্রতি মিলের ১৫ মিনিট আগে জল খেতে ভুলবেন না এবং সারা দিন ধরে কিছু কিছু সময় অন্তর অন্তরই অল্প অল্প করে জল খেতে থাকবেন। তাহলেই দেখবেন সিগারেটের সঙ্গে আপনার দূরত্ব বাড়তে শুরু করবে।

৩. মধু: সিগারেটের নেশা ছাড়াতে মধুর কোনও বিকল্প হয় না বললেই চলে! আসলে এই প্রকৃতিক উপাদানটির অন্দরে উপস্থিত ভিটামিন, এনজাইম এবং প্রোটিন শরীরের অন্দরে এমন কিছু পরিবর্তন করতে শুরু করে যে ধীরে ধীরে সিগারেট খাওয়ার ইচ্ছা কমতে শুরু করে। আসলে নিকোটিনের প্রভাবকে কমাতে সাহায্য করে মধু। ফলে স্মোকিং এর ইচ্ছা কমতে সময়ই লাগে না।

৪. মুলো: একাধিক কেস স্টাডিতে দেখা গেছে পুষ্টিগুণে ভরপুর এই সবজিটি অল্প পরিমাণ মধুর সঙ্গে মিশিয়ে যদি খাওয়া যায়, তাহলে ধূমপানের ইচ্ছা তো কমেই, সেই সঙ্গে স্মোকিং ছাড়ার কারণে যে যে শারীরিক সমস্যা হয়, তাও কমতে শুরু করে। তাই নতুন বছরে যদি এই কুঅভ্যাসকে ছাড়ার প্ল্যান করেন, তাহলে মুলো এবং মধুকে সঙ্গে রাখতে ভুলবেন না যেন!

৫. লঙ্কা: এতে উপস্থিত বিশেষ কিছু উপাদান ধূমপানের ইচ্ছা যেমন কমায়, তেমনি স্মোকিং ছাড়ার কারণে যে যে শারিরক অসুবিধাগুলি হতে থাকে, সেগুলিকেও কমায়। তাই কাঁচা লঙ্কা খাওয়ার পাশাপাশি যদি নিয়ম করে অল্প করে লঙ্কা গুঁড়ো জলে মিশিয়ে খেতে পারেন, তাহলে দারুন উপকার মেলে।

Random Post