প্রতিদিন কাঁচা লঙ্কা না খেলে কি হতে পারে জানেন?


কেউ কেউ খেতে খেতে ২-৩ টে উড়িয়ে দেন, তো কেউ ধারে কাছেও ঘেঁষতে চান না। কাঁচা লঙ্কাকে নিয়ে এমনই পছন্দ এবং অপছন্দের একটা আবহ থাকলেও ঝাল ঝাল এই ফলটি না খেলে যে কতটা ক্ষতি হয় শরীরের তা কেউ আন্দাজও করে উঠতে পারবেন না। তাই তো এই প্রবন্ধে আজ কাঁচা লঙ্কার নানাবিধ আজানা উপকারিতার বিষয়ে আলোচনা করা হল, যা পড়তে পড়তে এই নতুন বছরের শুরু তে আপনার আক্কেল যে একেবারে গুরুম হয়ে যাবে, সে বিষয়ে কোনও সন্দেহ নেই। লঙ্কার অন্দরের খবর জানতে নানা সময় নানা গবেষণা হয়েছে। তাতে যে যে তথ্য উঠে এসেছে, তা বাস্তবিকই চমকপ্রদ। আসলে আকার ছোট হলে কী হবে, শরীরে প্রবেশ করার পর লঙ্কা এমন সব খেল দেখাতে শুরু করে যে শরীর রোগ মুক্ত হয়ে উঠতে একেবার সময়ই লাগে না। এই কারণেই তো নিয়মিত অন্তত একটা করে লঙ্কা খাওয়ার পরামর্শ দিয়ে থাকেন চিকিৎসকরা। প্রসঙ্গত, রোজের ডায়েটে কাঁচা অবস্থায় হোক কী ভেজে, একটা করে লঙ্কাকে যদি রাখতে পারেন, তাহলে যে যে উপকার পাওয়া যায়, সেগুলি হল...

১. ওজন কমাতে সাহায্য করে: আপনি কি নতুন বছরে ওজন কমাতে বদ্ধপরিকর? তাহলে তো প্রতিদিন লঙ্কা খাওয়া মাস্ট! আসলে কাঁচা লঙ্কা সবজি না ফল এই নিয়ে বিতর্ক থাকলেও বিশেষজ্ঞরা একটা বিষয় মেনে নিয়েছেন যে প্রতিদিন কাঁচা লঙ্কা খেলে হজম ক্ষমতা এত মাত্রায় বৃদ্ধি পায় যে ওজন বৃদ্ধির আশঙ্কা একেবারে কমে যায়। সেই সঙ্গে শরীরে জমে থাকা ফ্যাট সেলেরা এত মাত্রায় গলতে শুরু করে যে ওজন নিয়ন্ত্রণে চলে আসতে একেবারেই সময় লাগে না।

২.ক্যান্সার রোগকে দূরে রাখে: আই সি এম আর এবং কেন্দ্রীয় সরকারের পরিসংখ্যানের দিকে নজর ফেরালে এই বিষয়ে কোনও সন্দেহ থাকে না যে গত কয়েক দশকে আমাদের দেশে ক্যান্সার রোগের প্রকোপ মারাত্মকভাবে বৃদ্ধি পয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে কাঁচা লঙ্কা খাওয়ার প্রয়োজনও যে বেড়েছে, সে বিষয়ে কোনও সন্দেহ নেই। আসলে রাজের ডায়েটে কাঁচা লঙ্কাকে রাখলে শরীরে অ্যান্টিঅক্সিডেন্টের মাত্রা বাড়তে শুরু করে। এই উপাদানটি দেহে উপস্থিত টক্সিক উপাদানদের বের করে দিতে একেবারেই সময় নেয় না। ফলে ক্যান্সার সেল জন্ম নেওয়ার আশঙ্কা একেবারে কমে যায়। প্রসঙ্গত, সম্প্রতি প্রকাশিত একটি গবেষণায় দেখা গেছে প্রস্টেট ক্যান্সারকে দূরে রাখতে কাঁচা লঙ্কা বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে।

৩. হার্টের স্বাস্থ্যের উন্নতি ঘটায়: বেশ কিছু গবেষণায় দেখা গেছে কাঁচা লঙ্কার অন্দরে উপস্থিত একাধিক উপাকির উপাদান রক্তে উপস্থিত খারাপ কোলেস্টেরলের মাত্রা কমিয়ে ফেলতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে। ফলে হার্টের কোনও ধরনের ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কা একেবারে কমে যায়। সেই সঙ্গে ফাইব্রিনোলেটিক অ্যাকটিভিটিকে বাড়িয়ে দিয়ে মস্তিষ্কে যাতে ব্লাড ক্লট না হয়, সেদিকেও খেয়াল রাখে লঙ্কা। ফলে স্ট্রোকের আশঙ্কা একেবারে কমে যায়। তাই তো পরিবারে যদি হার্টের রোগের ইতিহাস থাকে, তাহলে কাঁচা লঙ্কা খেতে ভুলবেন না যেন!

৪. শরীরের স্বাভাবিক তাপমাত্রাকে ধরে রাখে: কাঁচা লঙ্কার স্বাদ কেন ঝাল হয় জানা আছে? আসলে এর মধ্যে উপস্থিত ক্যাপসিসিন নামক উপাদান এক্ষেত্রে নিজের খেল দেখিয়ে থাকে। আসলে এই উপাদানটি স্বাদ গ্রন্থিকে অ্যাকটিভ করে তোলার পাশাপাশি মস্তিষ্কের হাইপোথেলামাস অংশকে অতি মাত্রায় সচল করে তোলে। ফলে শরীরের তাপমাত্র এতটা কমে যায় যে গরমের খারাপ প্রভাব দেহের উপর পরার আশঙ্কা একেবারেই থাকে না। এই কারণেই তো আমাদের দেশ গরমকালে নানাভাবে কাঁচা লঙ্কা খাওয়ার রেওয়াজ রয়েছে।

৫. সাইনাস ইনফেকশনের প্রকোপ কমায়: লঙ্কায় উপস্থিত ক্যাপসিসিন মিউকাস মেমব্রেনের অন্দরে রক্তের প্রবাহ বাড়িয়ে দেয়। ফলে ঠান্ডা লাগার কারণে হওয়া নানবিধ শারীরিক সমস্যা যেমন কমে যায়, তেমনি সাইনাস ইনফেকশনের কষ্ট কমতেও সময় লাগে না। তাই যারা ঠান্ডা পরলেই এমন ধরনের রোগে ভুগে থাকেন, তারা এই শীতকালে খাবারের সঙ্গে কাঁচা লঙ্কা খেতে ভুলবেন না যেন!

৬. ব্যথা কমায়: বছর শেষে এত পার্টি করেছেন যে আজ সকাল থেকেই বডি পেন একেবারে মাত্রা ছাড়িয়েছে? চিন্তা নেই! কয়েকটা লঙ্কা খাবারের সঙ্গে কাঁচা আবস্থাতেই খেয়ে ফেলুন। দেখবেন কষ্ট কমতে সময় লাগবে না। আসলে লঙ্কার অন্দরে উপস্থিত একাধিক উপকারি উপাদান দেহের অন্দরে প্রবেশ করার পর এমন খেল দেখাতে শুরু করে যে কোনও ধরনের যন্ত্রণা কমতে সময়ই লাগে না। সেই সঙ্গে হজম ক্ষমতার উন্নতিতে এবং আলসারের মতো রোগকে দূরে রাখতেও কাঁচা লঙ্কা বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে।

Random Post