চা খাচ্ছেন, খান না কোনও ক্ষতি নেই! তবে তাতে একটু হলুদ ফেলে দেখুন না কী হয়!

সুদূর চায়না থেকে ভারত হয়ে পশ্চিমী দেশে কোন মশলার জয়জয়কার ছড়িয়ে পরেছে বলতে পারেন? আরে দাঁড়ান দাঁড়ান গুগুল বাবাকে জিজ্ঞাস করতে হবে না, আমি বলে দিচ্ছি! সেই মশলার নাম হল হলুদ। আজ থেকে হাজার বছর আগে থেকেই নানাবিধ রোগ সারাতে কাজে লাগানো এই মশলাটি বাস্তবিকই শরীরের প্রতিটি অঙ্গের কর্মক্ষমতা বাড়াতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে। তাই তো বলি বন্ধু খাবারে মিশিয়ে খাওয়ার সুযোগ না পেলে, কয়েক চামচ চায়ে ফেলে খাওয়া শুরু করুন। তারপর দেখুন কেমন ফল পান! কী! যতক্ষণ না প্রমাণ পাচ্ছেন, ততক্ষণ বিশ্বাস করবেন না। ঠিক আছে, কেনও চিন্তা নেই! পাঁচ মিনিট খরচ করে এই লেখাটি পড়ে ফেলুন, তাহলেই দেখবেন হলুদ চায়ের গুণ নিয়ে মনে আর কোনও সন্দেহ থাকবে না। প্রসঙ্গত, এই পানীয়টি নিয়মিত খাওয়া শুরু করলে সাধারণত যে যে উপকারগুলি পাওয়া যায়, সেগুলি হল...

১. ওজন নিয়ন্ত্রণে চলে আসে: অতিরিক্তি ওজনের কারণে কি চিন্তায় রয়েছেন? তাহলে সকাল-বিকাল হলুদ চা খাওয়া শুরু করুন, দেখবেন শরীরের অতিরিক্তি ইতি-উতি জমতে থাকা মেদ ঝরে যেতে সময় লাগবে না। আসলে হলুদে এমন কিছু উপাদান রয়েছে, যা শরীরের অন্দরে প্রবেশ করা মাত্র এমন কিছু পরিবর্তন করে যে মেদ জমার আর কোনও সুযোগই থাকে না।

২. রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে থাকে: ২০১৩ সালে হওয়া বেশ কিছু স্টাডিতে দেখা গেছে হলুদে উপস্থিত কারকিউমিন, শরীরে প্রবেশ করা মাত্র এমন কিছু খেল দেখায় যে রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাওয়ার আশঙ্কা হ্রাস পায়। তাই তো যাদের পরিবারে এই মারণ রোগের ইতিহাস রয়েছে, তাদের নিয়মিত হলুদ চা খাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়ে থাকে।

৩. খারাপ কোলেস্টেরলের মাত্রা কমে: বেশ কিছু গবেষণায় দেখা গেছে হলুদে উপস্থিত কার্কিউমিন রক্তে জমতে থাকা এল ডি এল বা খারাপ কোলেস্টেরলের মাত্রা কমায়। ফলে স্বাভাবিভাবেই হার্টের কোনও ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কা হ্রাস পায়। আসলে শরীরে কোলেস্টেরলের মাত্রা যত কমতে শুরু করে, তত হার্টের ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনাও কমে। সেই সঙ্গে হার্ট অ্যাটাক এবং স্ট্রোকের সম্ভাবনাও হ্রাস পায়।

৪. ত্বকের সৌন্দর্য বৃদ্ধি পায়: নিয়মিত হলুদ মেশানো চা খাওয়া শুরু করলে দেহের অন্দরে এমন কিছু উপাদানের মাত্রা বাড়তে থাকে, যার প্রভাবে ত্বকের স্বাস্থ্যের এত মাত্রায় উন্নতি ঘটে যে ছোট-বড় সব ধরনের স্কিন ডিজিজের প্রকোপই কমতে শুরু করে। শুধু তাই নয়, সোরিয়াসিস এবং একজিমার মতো মারাত্মক ত্বকের রোগের চিকিৎসাতেও এই বিশেষ পানীয়টি নানাভাবে সাহায্য করে থাকে।

৫.হজম শক্তির উন্নতি ঘটে: বাঙালি মানেই জন্ম খাদ্যরসিক, আর পেটুক মানেই বদহজম রোজের সঙ্গী! তাই তো প্রতিটি বাঙালির নিয়ম করে হলুদ চা খাওয়া উচিত। কারণ হলুদে উপস্থিত একাধিক উপকারি উপাদান পাকস্থলিতে উপস্থিত উপকারি ব্যাকটেরিয়ার শক্তি বাড়িয়ে দেয়। ফলে হজন ক্ষমতা এতটা বেড়ে যায় যে বদ-হজম দূরে পালায়।

৬. হার্টের ক্ষমতা বাড়ে: একাধিক গবেষণায় দেখা গেছে নিয়মিত হলুদ দিয়ে বানানো চা খেলে হার্টে রক্ত সরবরাহকারি আর্টারিদের কর্মক্ষমতা বৃদ্ধি পেতে শুরু করে। ফলে বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে হার্টের কোনও ধরনের ক্ষতি হওয়ার বা হার্ট ডিজিজে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা কমে। শুধু তাই নয়, স্ট্রোকের মতো মারণ রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা কমাতেও হলুদ বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে। তাই হার্টকে যদি দীর্ঘদিন চাঙ্গা রাখতে চান, তাহলে হলুদ দিয়ে বানানো চা খাওয়া মাস্ট!

৭. অ্যালঝাইমার্সের মতো রোগ দূরে থাকে: বেশ কিছু গবেষণায় দেখা গেছে হলুদে উপস্থিত কার্কিউমিন নামক উপাদান ব্রেন সেলের যাতে কোনও ভাবে ক্ষতি না হয়, সেদিকে নজর রাখে। তাই তো নিয়মিত হলুদ দিয়ে বানানো চা খাওয়া শুরু করলে ব্রেন পাওয়ার এতটা বৃদ্ধি পায় যে মস্তিষ্ক সম্পর্কিত কোনও রোগই ধারে কাছেও ঘেঁষতে পারে না। তাই তো বলি বন্ধু যাদের পরিবারে এই ভয়ঙ্কর রোগের ইতিহাস রয়েছে, তাদের নিয়মিত হলুদ চা খাওয়া শুরু করা উচিত।

৮. ব্রেন পাওয়ার বৃদ্ধি পায়: হলুদে রয়েছে প্রচুর মাত্রায় অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, যা রক্তে উপস্থিত ক্ষতিকর উপাদানদের শরীরে থেকে বার করে দেয়। ফলে ব্রেন সেল ড্যামেজের আশঙ্কা কমে। অন্যদিকে কার্কিউমিন মস্তিষ্কের বিশেষ কিছু অংশের ক্ষমতা এতটা বাড়িয়ে দেয় যে স্মৃতিশক্তি লোপ পাওয়ার আশঙ্কা হ্রাস পায়। সেই সঙ্গে বুদ্ধির জোরও বাড়তে থাকে।

৯. রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতার উন্নতি ঘটে: নানাবিধ পুষ্টিকর উপাদানে সমৃদ্ধ হলুদ দিয়ে বানানো চা খেলে শরীরের অন্দরে বেশ কিছু পরিবর্তন হতে থাকে, যার প্রভাবে ধীরে ধীরে রোগ প্রতিরোধ করার ক্ষমতা বাড়তে শুরু করে। ফলে রোগমুক্ত জীবন পাওয়ার স্বপ্ন একেবারে হাতের মুঠোয় চলে আসে। ১০.ক্যান্সারের মতো মারণ রোগ দূরে থাকে: ১০.ক্যান্সারের মতো মারণ রোগ দূরে থাকে: সম্প্রতি প্রকাশিত একটি রিপোর্ট অনুসারে হলুদে উপস্থিত অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এবং অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি প্রপাটিজ, শরীরে যাতে ক্যান্সার সেল জন্ম নিতে না পারে সেদিকে খেয়াল করে। ফলে স্বাভাবিকভাবেই ক্যান্সার রোগ ধারে কাছেও ঘেঁষতে পারে না। এবার নিশ্চয় বুঝতে পরেছেন হলুদ চা খাওয়া কতটা প্রয়োজন।

Random Post