প্রতিদিন ৩ চামচ করে জিরা খেলে দেখবেন ওজন কমবে তরতরিয়ে!

চটজলদি ওজন কমাতে চান নাকি? তাহলে প্রতিদিন এক চামচ করে জিরা খাওয়া শুরু করুন। দেখবেন কয়েক মাসের মধ্যে উপকার মিলবে। আসলে এই মশলাটির অন্দরে উপস্থিত থাইমল নামক একটি যৌগ শরীরে প্রবেশ করার পর হজম ক্ষমতার এত মাত্রায় উন্নতি ঘটায় যে শরীরের ইতি-উতি মেদ জমার সম্ভাবনা যায় কমে। তবে এমন উপকার পেতে দিনে কম করে ৩ বার জিরা দিয়ে বানানো চা অথবা ৩ চামচ জিরা পাউডার খেতে হবে, তাহলেই দেখবেন উপকার মিলতে শুরু করছে।

একাধিক গবেষণায় দেখা গেছে জিরাতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে আয়রন, ম্যাগনেসিয়াম, ক্যালসিয়াম, ফসফরাস, কপার, জিঙ্ক,পটাশিয়াম এবং আরও নানা ধরনের ভিটামিন এবং মিনারেল, যা শরীরে প্রবেশ করার পর এমন খেল দেখায় যে শুধু ওজন নিয়ন্ত্রণে আসে না, সেই সঙ্গে আরও বহু রোগ দূরে পালাতে বাধ্য হয়। যেমন ধরুন...

১. হাড়ের স্বাস্থ্যের উন্নতি ঘটে:

জিরায় উপস্থিত ক্যালসিয়াম, বোন ডেনসিটির উন্নতি ঘটাতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে। তাই তো নিয়মিত এই মশলাটি খাওয়া শুরু করলে হাড়ের স্বাস্থ্যের এত মাত্রায় উন্নতি ঘটে যে কোন ধরনের হাড়ের রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা যায় কমে।

২. ডায়াবেটিসের মতো রোগ ধারে কাছে ঘেঁষতে পারে না:

একাধিক গবেষণায় দেখা গেছে নিয়মিত জিরা খাওয়া শুরু করলে রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণের বাইরে যাওয়ার আশঙ্কা একেবারে কমে যায়। সেই সঙ্গে ইনসুলিনের কর্মক্ষমতাও বাড়ে। ফলে ডায়াবেটিসের মতো মারণ রোগ শরীরে বাসা বাঁধার আশঙ্কা যায় কমে।

৩. আয়রনের ঘাটতি দূর হয়:

বেশ কিছু স্টাডিতে দেখা গেছে জিরাতে উপস্থিত আয়রন, শরীরে প্রবেশ করে একদিকে যেমন হিমোগ্লোবিন লেভেলের মাত্রা বৃদ্ধি করে, তেমনি সারা শরীরে রক্তের প্রবাহ বাড়িয়ে দেয়। ফলে অ্যানিমিয়ার মতো রোগের প্রকোপ কমতে সময় লাগে না। সেই সঙ্গে মেনস্ট্রয়াল সার্কেল যেমন ঠিক মতো হতে শুরু করে, তেমনি সামগ্রিক ভাবে শরীরের সচলতা বৃদ্ধি পেতেও সময় লাগে না।

৫. কনস্টিপেশনের মতো রোগ দূরে পালায়:

আপনি কি কনস্টিপেশন সমস্যায় ভুগছেন? তাহলে আজ থেকেই জিরার সঙ্গে বন্ধুত্ব পাতান, দেখবেন আরাম মিলবে। কারণ এতে রয়েছে প্রচুর মাত্রায় ফাইবার, যা বেশ কিছু এনজাইমের ক্ষরণ বাড়িয়ে দিয়ে কোষ্টকাঠিন্যের মতো রোগ সারাতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে। শুধু তাই নয়, পাইলসের কষ্ট কমাতেও জিরা দারুনভাবে সাহায্য করে। এক্ষেত্রে ১ চামচ জিরা ভেজে নিয়ে গুঁড়ো করে নিন। তারপর সেই পাউডার ১ গ্লাস জলে মিশিয়ে প্রতিদিন সকালে খালি পেটে খাওয়া শুরু করুন। দেখবেন উপকার মিলবে। প্রসঙ্গত, জিরা পাইডার এবং জলের সঙ্গে অল্প করে মধু মিশিয়েও খেতে পারেন। এমনটা করলে বেশি উপকার পাবেন।

৬. ত্বক সুন্দর হয়ে ওঠে:

পরিমাণ মতো মধুর সঙ্গে জিরা মিশিয়ে একটা ফেস প্যাক বানিয়ে নিন। তারপর সেটি নিয়মিত মুখে লাগাতে থাকুন। এমনটা করলে দেখবেন অল্প দিনেই ত্বকের হারিয়ে যাওয়া ঔজ্জ্বল্য ফিরে আসবে। সেই সঙ্গে ত্বক আরও বেশি করে সুন্দর হয়ে উঠবে। এখন প্রশ্ন হল, ফেস প্যাকটি বানাবেন কীভাবে? এক্ষেত্রে হাফ চামচ হলুদ গুঁড়োর সঙ্গে হাফ চামচ জিরা পাউডার এবং ১ চামচ মধু মিশিয়ে নিন। তারপর ভাল করে সবকটি উপাদান মেখে নিয়ে মুখে লাগান। ফেস প্যাকটি ১০ মিনিট রেখে দেওয়ার পর গরম জল দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। প্রসঙ্গত, সপ্তাহে ২-৩ বার এইভাবে ত্বকের পরিচর্যা করলেই দেখবেন ফল মিলতে শুরু করেছে।

৭. চুলের সৌন্দর্য বৃদ্ধি পায়:

রুক্ষ হয়ে যাওয়া চলের সৌন্দর্য ফিরিয়ে আনতেও জিরা নানাভাবে সাহায্য করতে পারে। কীভাবে? এক্ষেত্রে ১ গ্লাস জলে ১ চামচ জিরা পাউডার এবং ১টা ডিমের কুসুম মিশিয়ে নিন। তারপর সেই মিশ্রনটি চুলে লাগিয়ে কিছুক্ষণ রেখে দিন। যখন দেখবেন মিশ্রনটি শুকিয়ে গেছে, তখন ভাল করে চুলটা ধুয়ে নিন। সপ্তাহে ১ বার এইভাবে চুলের পরিচর্যা করলেই দেখবেন হারিয়ে সৌন্দর্য ফিরে আসবে।

৮. ভাবী মায়েদের জন্য উপকারি:

গর্ভাবতী মহিলাদের শরীর ঠিক রাখতে জিরার কোনও বিকল্প হয় না বললেই চলে। এই সময় ভাবি মায়েদের কনস্টিপেশন এবং হজমের সমস্যা হয়ে থাকে। আর যেমনটা আগেও আলোচনা করা হয়েছে যে, জিরা এই দু ধরনের সমস্যা কমাতে দারুন উপকারে লাগে। সেই সঙ্গে মাথা ঘোরা এবং গর্ভাবস্থা সম্পর্কিত আরও সব লক্ষণ কমাতেও বিশেষ ভূমিকা নেয়। সেই কারণেই তো ভাবি মায়েদের প্রতিদিন ১ গ্রাস গরম দুধে হাফ চামচ জিরা এবং ১ চামচ মধু মিশিয়ে খাওয়ার পরামর্শ দেন বিশেষজ্ঞরা।

৯. রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থার উন্নতি ঘটে:

জিরাতে উপস্থিত অ্যান্টি-ব্য়াকটেরিয়াল এবং অ্যান্টি- ইনফ্লেমেটরি প্রপাটিজ ঠান্ডা লাগা এবং জ্বরের প্রকোপ কমাতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে। আসলে এই প্রকৃতিক উপাদানটি শরীরের প্রবেশ করা মাত্র দেহের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাকে বাড়িয়ে দেয়। ফলে ভাইরাল ফিবার এবং ওই সংক্রান্ত নানাবিধ কষ্ট কমে যায়। জরের তাণ্ডব কমাতে ১ চামচ জিরা এবং অল্প পরিমাণ আদা, ১ গ্লাস জলে মিশিয়ে নিন প্রথমে। তারপর জলটা ফুটিয়ে নিয়ে ছেঁকে নিন। এই ছেঁকে নেওয়া জলটা দিনে ২-৩বার পান করুন। তাহলেই দেখবেন কষ্ট কমে যাবে।

Random Post